যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে যুব বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে বাংলাদেশ
জিতলেই বিশ্বকাপের সুপার সিক্স। হারলে পড়তে হবে সমীকরণের মারপ্যাঁচে। আরিফুলের সেঞ্চুরিতে ভর করে এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১২১ রানে হারিয়ে সহজেই সুপার সিক্স নিশ্চিত করল বাংলাদেশের যুবারা। এই জয়ের মাধ্যমে শিরোপা পুনরুদ্ধারের অভিযানে আরও একধাপ এগিয়ে গেল রাব্বি-শিবলীরা।
আজ শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) । দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুমফন্টেইনের মাঙ্গাউং ওভালে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৯১ রান তোলে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৭.১ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ১৭০ রানে থামে যুক্তরাষ্ট্র।
২৯২ রানের বড় লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি যুক্তরাষ্ট্রের। দলীয় ১১ রানের মাথায় ওপেনার মেহতার উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। ১৩ বলে পাঁচ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। তার বিদায়ের পর অবশ্য ঘুরে দাঁড়ায় যুক্তরাষ্ট্র। সিদ্ধার্থ কাপ্পাকে নিয়ে দারুণ জুটি গড়ে প্রনব চেত্তিপালায়ম।
দলীয় ৮৬ রানের কাপ্পার বিদায়ে দ্বিতীয় উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট। ৪৪ বলে ১৮ রান করে ফেরেন এই ব্যাটার। পাঁচ রানের ব্যবধানে তৃতীয় উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। এবার বিদায় নেন ফিফটি হাঁকানো ওপেনার চেত্তিপালায়ম। ৯০ বলে ৫৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর দলীয় ১১২ রানের মাথায় চতুর্থ উইকেট হারায় যুক্তরাষ্ট্র। এবার সাজঘরের পথ ধরেন অধিনায়ক রিশি রমেশ। ২২ বল খেললেও আট রানের বেশি করতে পারেননি তিনি। তার বিদায়ের পর উতকার্শ-প্যাটেল জুটিতে কিছুটা স্বস্তি পায় যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এই জুটিও খুব বেশি বড় হয়নি। দলীয় ১৫৩ রানের মাথায় আউট হন এই ব্যাটার। ৪৯ বলে ৩৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে শেষমেশ ১৭০ রানে থামে যুক্তরাষ্ট্র।
এর আগে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে নেমে দুই ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলী ও আদিল বিন সিদ্দিক ভালো শুরুর ইঙ্গিত দেয়। যদিও দলীয় ২৯ রানের মাথায় আদিলের বিদায়ে তাদের জুটি বড় হয়নি। আরিয়া গার্গের বলে তুলে মারতে গিয়ে প্যাটেলের হাতে ধরা পড়েন তিনি। আউটের আগে ২৮ বলে ১৩ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এরপর রিজওয়ানকে নিজে জুটি গড়েন শিবলী। এই জুটিতে যোগ হয় আরও ৩৮ রান। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি শিবলী। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় প্যাটেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
দুই উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে, আরিফুলকে নিয়ে সেই চাপ সামালের কাজটা করেন রিজওয়ান। অবশ্য, তাদের জুটিও বড় হয়নি। দলীয় ৯৪ রানের মাথায় রিজওয়ানের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ৪০ বলে ৩৫ রান করে ফেরেন রিজওয়ান।
রিজওয়ানের বিদায়ের পর আহরার আমিনকে নিয়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়েন আরিফুল। মাঝে ৯৯ বলে চলতি আসরে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন আরিফুল। দলীয় ২১৬ রানের মাথায় ৪৯ বলে ৪৪ রান করে বিদায় নেন আহরার। তার বিদায়ে ভাঙে এই দুইজনের ১২২ রানের জুটি।
সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি আরিফুল। দলীয় ২৩৭ রানের মাথায় ১০৩ বলে ১০৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার। তার বিদায়ের পর লেজের সারির ব্যাটারের দৃঢ়তায় ২৯১ রানে থামে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ : ৫০ ওভারে ২৯১/৭ (শিবলী ২৭, আদিল ১৩, রিজওয়ান ৩৫, আরিফুল ১০৩, আহরার ৪৪, জেমস ৩১, রাব্বি ২, জীবন ১৩, রাফি ৭; গার্গ ১০-০-৬৮-৩, অতিন্দ্র ১০-০-৫০-১, নাদকারনি ১০-০-৬১-২, ভালালা ৭-০-৪১-০, পার্থ ৮-০-৪০-১, উতকার্শ ৫-০-২৮-০)।
যুক্তরাষ্ট্র অনূর্ধ্ব-১৯ : ৪৭.১ ওভারে ১৭০/১০( প্রনব ৫৭, মেহতা ৫, কাপ্পা ১৮, রিশি ৮, উতকার্শ ৩৭, অমোঘ ১৪, পার্থ ০, ভালালা ৬, নাদকারনি ০, অতীন্দ্র ০, আরিয়া ০; ইমন ৪.১-১-১০-১, মারুফ ৪-১-২২-০, জীবন ১০-১-২৬-১, রিজওয়ান ৪-০-১৮-০, রাফি ১০-০-৪২-১, আরিফুল ৫-০-১৫-১, রাব্বি ১০-০-৩১-৪)।
ফল : বাংলাদেশ ১২১ রানে জয়ী।