ধোনিকে থামিয়ে আরসিবিকে জেতানো যশ দয়ালের রূপকথার উত্থান
এক বছর আগের একটা ম্যাচে ফেরা যাক। একটু ফ্ল্যাশব্যাক যাকে বলে। ৯ এপ্রিল ২০২৩। আইপিএলে মুখোমুখি গুজরাট টাইটান্স ও কলকাতা নাইট রাইডার্স। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম দেখল অবিশ্বাস্য এক ম্যাচ। গুজরাটের লক্ষাধিক ভক্তকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন রিঙ্কু সিং নামে এক অখ্যাত তরুণ।
গুজরাটের বিপক্ষে শেষ ওভারে জয়ের জন্য কলকাতার প্রয়োজন ছিল ২৮ রান। পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা মেরে দুর্দান্ত এক জয়ের গল্প লিখলেন রিঙ্কু। সেই ওভারের হতভাগা বোলারের নাম ছিল যশ দয়াল। সেই এক ওভার যেন অন্ধকার নামায় দয়ালের ক্যারিয়ারে। পুরো আসরে খেলেছিলেন মাত্র পাঁচটি ম্যাচ। দুই মৌসুমে গুজরাট যেখানে তাকে খেলিয়েছে ১৪ ম্যাচ, সেখানে এবার এক মৌসুমেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জার্সিতে খেলেছেন ১৩ ম্যাচ।
গত বছরের এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ১৮ মে’তে ফেরা যাক। চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে আরসিবির বাঁচা-মরার ম্যাচ। চেন্নাইকে ২১৯ রানের লক্ষ্য দিয়েছিলেন কোহলি-ডু প্লেসিসরা। ম্যাচ না জিতলেও চলত চেন্নাইয়ের। ২০০ পার করতে পারলেই নিশ্চিত হতো পরের পর্ব। ১৯ ওভার শেষে চেন্নাইয়ের সংগ্রহ ছয় উইকেটে ১৮৪। ধারাভাষ্য কক্ষ থেকে ভেসে আসছিল, চেন্নাই ১৭ রান করলেই নিশ্চিত হবে প্লে-অফ।
ব্যাটিংয়ে থাকা ধোনি যশ দয়ালের করা প্রথম বলেই পুল করলেন, ছক্কা মেরে ওভার শুরু করলেন ক্যাপ্টেন কুল। দয়ালের সামনে তখন আরেকটি ভয়ানক শেষ ওভার অপেক্ষায়। কিন্তু, রোজকার গল্প তো এক হতে পারে না। পরের বলটা স্লোয়ার ফেললেন দয়াল। ধোনির শট স্কয়ার লেগে স্বপ্নীল সিংয়ের হাতে। চেন্নাইয়ের হাতে তখনও চার বল, প্রয়োজন ১১ রান। পরের চার বলে দয়াল দিলেন মাত্র এক রান। বেঙ্গালুরু ম্যাচ জিতল, নিশ্চিত হলো প্লে-অফ।
আরসিবি সমর্থকদের সঙ্গে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন দয়াল নিজেও। এক বছর আগের একটি ওভার দুঃস্বপ্নের মতো তাড়িয়ে বেড়াচ্ছিল তাকে। সেই দুঃস্বপ্ন পরিণত হলো রঙিন স্বপ্নঘুড়িতে। চাপের মুখে বরাবর শান্ত থাকা ধোনিকে আউট করা চাট্টিখানি কথা নয়।
ম্যাচ শেষে ইএসপিএনক্রিকইনফোর টাইম আউট শোতে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ক্রিকেটার টম মুডি যেন বলেছেন দয়ালের না বলা কথাটি—এখন থেকে দয়ালকে আর রিঙ্কুর হাতে মার খাওয়া ওভারের জন্য কেউ মনে রাখবে না। এখন তিনি আরসিবিকে জয় এনে দেওয়া রূপকথার নায়ক। পাঁচ বলে পাঁচ ছক্কা খাওয়া ছেলেটি চার বলে ১১ রান ঠেকিয়ে দিয়েছে।