শেষ পরীক্ষায় ভোরে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
সুযোগ ছিল ভারতকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিতে খেলার যে স্বপ্ন তা টিকিয়ে রাখার। স্বপ্ন এখনও টিকে আছে, তবে সেটা কাগজে-কলমে। শেষ ম্যাচে আফগানদের শুধু হারালে হবে না, তাকিয়ে থাকতে হবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের দিকেও। সবমিলিয়ে সুপর এইটের শেষ ম্যাচের আগে বেশ চাপে বাংলাদেশ দল।
বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আগেও ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তবে, এবারের লড়াইটা অন্য যেকোনো বারের চেয়ে বেশ ভিন্ন। এবার ফেবারিটের তকমা গায়ে লাগিয়ে বাংলাদেশ নয়, আফগানিস্তান মাঠে নামবে। অন্তত শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয়ই বলে দেয়, দল হিসেবে কতটা ছন্দে আছে আফগানরা।
পরিসংখ্যানেও এগিয়ে রশিদরা। এখন পর্যন্ত ১১ বারের দেখায় ৬ জয় আফগানদের বাকি ৫টিতে জয় বাংলাদেশের। গত বছরের জুলাইতে ঘরের মাঠে আফগানদের বিপক্ষে সিরিজে অবশ্য ২-০ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও তাদের হারিয়েছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। সেই আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করেই কাল মাঠে নামবে লাল-সবুজের দল।
এই ম্যাচে বাংলাদেশের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ স্পিন জুজু। অতীতে বেশ কয়েকবার রশিদ-মুজিবদের বিশ্বসেরা স্পিন আক্রমণের সামনেই ধরাশায়ী হয়েছে ব্যাটাররা। তাই এবার আফগান চ্যালেঞ্জে জিততে হলে যে মূল দায়িত্বটা ব্যাটারদের নিতে হবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ এবারের বিশ্বকাপে বোলিংয়ে দারুণ করেছে বাংলাদেশ। মুস্তাফিজ-তানজিমদের সামলানো সহজ হবে না গুরবাজদের জন্য।
এই ম্যাচ জিতে শেষটা রাঙাতে চায় বাংলাদেশ। ম্যাচের আগে সহকারী কোচ নিক পোথাস বলেন, ‘প্রতিটি ম্যাচেই আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে চাইবেন। আমরাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের অনেক সাফল্য আছে। ওদের বিপক্ষে সিরিজও জিতেছি। আপনি ক্রিকেটের মতো খেলায় আপনার দেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন, এটা অনেক সম্মানের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে অতীতে অনেক সাফল্যই আছে। আমরা তাই এই ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপ শেষ করতে চাই।’
এই ম্যাচের আগে বাংলাদেশের নজর থাকবে ভারত-অস্ট্রেলিয়া লড়াইয়ে। কেননা যদি ভারত হেরে যায় তবে বাংলাদেশের সেমিতে ওঠার যে সম্ভাবনা তা শেষ হয়ে যাবে। তখন লড়াইটা হবে শুধু ভারত আর আফগানিস্তানের মধ্যে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশকে যেকোনো মূল্যে হারাতে হবে আফগানদের। এরপর দেখা হবে দুদলের নেট রানরেট। যারা এগিয়ে থাকবে, তারাই যাবে সেমিতে।
এই ম্যাচের একাদশে বেশকিছু পরিবর্তন আনতে পারে বাংলাদেশ। স্পিনার মেহেদী হাসানের পরিবর্তে একাদশে দেখা যেতে পারে পেসার শরিফুল ইসলামকে। ফিরতে পারেন পেসার তাসকিন আহমেদ, সেক্ষেত্রে বাদ পড়তে পারেন ব্যাটার জাকির আলী অনিক। যেহেতু স্পিন দিয়ে কাবু করা কঠিন, তাই পেস ডিপার্টমেন্টের ওপরই ভরসা রাখতে হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টকে।
সবমিলিয়ে জমজমাট এক লড়াইয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমীরা। আগামীকাল মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভোরে সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৬টায় শুরু হবে এই লড়াই। আফগানদের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে শেষটা জয়ে রাঙাবে বাংলাদেশ, নাকি প্রথমবার সেমিতে গিয়ে বিশ্বকে আরও একবার চমকে দেবে রশিদ-নবীরা, সেই উত্তরের জন্য আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা।ৃ