তবুও তিনি মেসি!
শেষের শুরুতে চলে এসেছেন লিওনেল মেসি। কোপা আমেরিকায় ঠিক সেই মেসিকে দেখা যাচ্ছে না, যাকে দেখে অভ্যস্ত ফুটবল দুনিয়া। কেউ কেউ থাকেন, যাদের চোখের দেখাই বড় শান্তি। মেসিকে দেখার আগে ভক্তদের চোখ থাকে তার বাম পায়ে, সেই পা-ও এবার করেছিল বেইমানি করেছিল। ইকুয়েডরের বিপক্ষে মিস করেছিলেন স্পটকিক!
মেসি মিস করলেও আর্জেন্টিনা সেমিফাইনাল মিস করেনি। টানা দ্বিতীয় কোপা আমেরিকার ফাইনাল থেকে এক ম্যাচ দূরত্বে তারা। সেমিফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ কানাডা। আরেকটি ফাইনালে যাওয়ার আগে আর্জেন্টিনার বড় ভয় মেসিকে নিয়েই। চোট থেকে সেরে ওঠা এই তারকা যেন চোটে না পড়েন আবারও, সতর্ক আলবিসেলেস্তেরা। কানাডাকে হারালেই ফাইনাল, যেখানে মেসিকে বড্ড বেশি প্রয়োজন।
গ্রুপ পর্বে পেরুর বিপক্ষে মাঠে নামেননি মেসি। সমস্যা ছিল চোট। কানাডা ও চিলির বিপক্ষে খেলেছিলেন। কানাডা ম্যাচে লাউতারো মার্টিনেজের গোলে সরাসরি সহায়তা করেন মেসি। তার পা থেকেই উৎপত্তি হয়েছিল হুলিয়ান আলভারেজের গোলের প্রথম উৎস। কোয়ার্টার ফাইনালে ইকুয়েডর ম্যাচে লিসান্দ্রো মার্টিনেজের করা গোলটি এসেছিল কর্ণারের জটলা থেকে। কর্ণার কিকটি করেছিলেন মেসি। যদিও, সেই গোলে তার অবদান প্রায় শূন্যের কাছাকাছি।
চলমান কোপা আমেরিকায় তিন ম্যাচ খেলে নেই কোনো গোল, অ্যাসিস্ট কেবল একটি। করেছেন পেনাল্টি মিস। তবু, মেসিকে ফেলে দেওয়ার জো নেই। নামটা মেসি বলেই তিনি সুযোগ রাখেননি।
‘প্রকৃতির এই খসখসে গালে আর কী রং মাখাবে চৈত্র,
তোমার পকেটে ভাঁজ-করা শতবর্ষের শীতকাল,
মাতাল হাওয়ায় যতই এই বার্ধক্য ঢেকে দিতে চাও
তার মুখমণ্ডলে জমে আছে উত্তর গোলার্ধের অনন্ত বরফ!’
মহাদেব সাহার ‘বসন্তের একটি বাংলা উদ্বৃত্তি’ কবিতার এ-কটা লাইনের মতোই কি আজকের মেসি? হতে পারেন, না-ও হতে পারেন। যে মেসি চাপের মুখে মাঠে বমি করেছিলেন, সেই মেসিই তো কাতারে উগরে দিয়েছেন না পাওয়ার সমস্ত হাহাকার। জিতেছেন, জিতিয়েছেন বিশ্বকাপ। তার আগে কোপা আমেরিকা জিতে ঘুচিয়েছেন দীর্ঘ শিরোপাখরা।
মেসি একজন নেতা বটে। যার জন্য সবটুকু উজাড় করতে দ্বিতীয়বার ভাবেন না এমিলিয়ানো মার্টিনেজ, রদ্রিগো ডি পলরা। আর নেতারা ঠিক তখন সামনে আসেন, যখন সহচররা তাকে অনুভব করেন ভীষণভাবে। তাই তো তিনি মেসি, কয়েক সেকেন্ড পেলেই উত্তাল করে দিতে পারেন গ্যালারির ঢেউ, বসন্ত এনে দিতে পারেন মাঠের গাঢ় সবুজে।