বাংলাদেশের ক্রিকেটে আরও একটি অধ্যায়ের অবসান ঘটল। টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ক্যারিয়ারে ১৭ বছরের যে যাত্রা, তার গন্তব্য থেকে দুই ম্যাচ দূরে তিনি। ১২ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে হায়দরাবাদে ক্যারিয়ারের ইতি টানবেন ৩৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার।

ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির আগে আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে বিদায়ের ঘোষণা দেন মাহমুদউল্লাহ।

ক্রিকেটে সাফল্যের দিক থেকে বাংলাদেশ খুব বড় কিছু করেনি। সাফল্য এসেছে হাতের আঙুলে গুণে অল্প কয়বার। তার প্রায় সবগুলোতেই সারথী ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। সুখের দিনে আনন্দে যেমন করেছেন, ভাগ নিয়েছেন দুঃখের। বরং, অন্যদের চেয়ে বেশি সমালোচিত হয়েছেন। বাংলাদেশ হারলে কোথাও না কোথাও তার দায় মাহমুদউল্লাহর ওপর অনেকাংশেই চাপত। তবু, নিজের জায়গা থেকে চেষ্টা করে গেছেন তিনি। সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে ক্ষুদ্র সংস্করণে প্রায় দেড় যুগ কাটিয়ে দিলেন।

২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছিল মাহমুদউল্লাহর বর্ণিল ক্যারিয়ার। এই সময়ে মাহমুদউল্লাহ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ১৩৯টি। ভারতের বিপক্ষে শেষ দুই ম্যাচ খেললে সেটি দাঁড়াবে ১৪১টিতে। বাংলাদেশের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি টি-টোয়েন্টি খেলার রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি।

১৩৯টি ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ২ হাজার ৩৯৫। এই ফরম্যাটে তার সর্বোচ্চ রান ৬৪। এই সংস্করণে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক মাহমুদউল্লাহ। সবচেয়ে বেশি ২ হাজার ৫৫১ রান করেছেন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে অবসর নেওয়া সাকিব।

ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বল হাতেও দেশের জার্সিতে ভূমিকা রেখেছেন এই অলরাউন্ডার। বল হাতে হাত ঘুরিয়ে এই ফরম্যাটে উইকেট নিয়েছেন ৪০টি। সেরা বোলিং ফিগার ১০ রান দিয়ে তিন উইকেট। ফিল্ডার হিসেবেও বাকিদের চেয়ে এগিয়ে সাইলেন্ট কিলার-খ্যাত এই অলরাউন্ডার। বিশ ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫০টি ক্যাচ লুফে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড মাহমুদউল্লাহর দখলে। ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে তার অধিনায়কত্বে মোট ৪৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের সঙ্গে যৌথভাবে সবচেয়ে বেশি জয়ও তার। অধিনায়ক হিসেবে ১৬টি ম্যাচ জিতেছেন মাহমুদউল্লাহ। ২০২১ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও লাল-সবুজের নেতৃত্ব দেন তিনি।