ভারতীয় আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে হতাশ বাংলাদেশ

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে গুয়াহাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ জয়ের পথেই এগিয়ে যাচ্ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ান ইংল্যান্ডের ব্যাটার হিদার নাইট। বিতর্কিত সিদ্ধান্তে দুবার জীবন পেয়ে ৭৯ রানের ইনিংস খেলে ইংলিশদের চার উইকেটে জিতিয়ে ফিরেছেন তিনি।
ম্যাচ শেষে টিভি আম্পায়ার ভারতের গায়ত্রী ভেনুগোপালের বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি ম্যাচ শেষে নাইটও জানিয়েছেন, তিনি মনে করছিলেন আউট হয়ে গেছেন।
নাইট আউট হলে ম্যাচের ফলাফলটাও ঘুরে যেতে পারতো। ক্যাচটি নিয়ে তাই আফসোস করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।
ঘটনাটি ঘটে ইংল্যান্ডের ইনিংসের ১৫তম ওভারে। ফাহিমা খাতুনের লেগ স্পিনে কাভারের দিকে বল তুলে দেন নাইট। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা স্বর্ণা আক্তার ডানদিকে ডাইভ দিয়ে নিচু থেকে ক্যাচ ধরেন। নাইট তখনই হাঁটতে শুরু করেছিলেন, তবে মাঠের আম্পায়াররা বিষয়টি টিভি আম্পায়ারের কাছে পাঠান। টিভি আম্পায়ার গায়ত্রী ভেনুগোপালন মনে করেন, স্বর্ণার আঙুল বলের নিচে পুরোপুরি ছিল না—যার ফলে নাইটকে নটআউট দেওয়া হয়।
ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন নাইটের রান ছিল মাত্র ১৩। পরে তিনি ১১১ বলে অপরাজিত ৭৯ রান করে দলকে ২৩ বল হাতে রেখে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।
ক্যাচটি নিয়ে ম্যাচ শেষে নাইট বলেন, ‘প্রথম দেখাতেই আমার মনে হয়েছিল ওটা আউট ছিল। আমি মনে করেছিলাম বলটা ঠিকভাবে ধরা হয়েছে এবং ক্যাচটা ঠিক ছিল। তাই আমি মাঠ ছেড়ে হাঁটা শুরু করেছিলাম। কিন্তু টিভি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ছিল ভিন্ন। আজ আমার ভাগ্য একটু সহায় ছিল। তবে গত এক বছরে আমার যে সময় কেটেছে, তাতে মনে করি এইটুকু সৌভাগ্য আমি প্রাপ্য ছিলাম। আমি চেষ্টা করেছি সেই সুযোগটা কাজে লাগাতে এবং সেটাকে কাজে পরিণত করতে।’
বাংলাদেশের বোলার ফাহিমা এই ম্যাচে ১০ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছেন। আম্পায়ারের এমন সিদ্ধান্তে তিনি হতাশা ও আফসোস প্রকাশ করেন।
ম্যাচ শেষে ফাহিমা বলেন, ‘এই সিদ্ধান্তটা আমাদের জন্য হতাশাজনক ছিল। দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ই মনে করেছিল ওটা পরিষ্কার আউট। শুরুতে আউট দেওয়ার পর সেটি ফিরিয়ে নেওয়া হয়, যা আমাদের জন্য হতাশার ছিল। আমরা সবাই জানি, ওই উইকেটটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যদি সিদ্ধান্তটা আমাদের পক্ষে যেত, তাহলে ম্যাচের ফল অন্যরকম হতে পারত।’
চোট থেকে ফেরার পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এটিই ছিল নাইটের প্রথম ইনিংস। আর এই ম্যাচেই তিনবার জীবন পেলেন তিনি। নাইট মাঠে নেমে প্রথম বলেই কট বিহাইন্ড আউট হন, তবে রিভিউতে বেঁচে যান। রিভিউতে দেখা যায় মারুফা আক্তারের ইনসুইং ডেলিভারি ব্যাট স্পর্শ না করে সামনের প্যাডে লাগে।
এরপর সপ্তম ওভারে আবারও এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন নাইট। এবারও রিভিউ নিয়ে সফল হন তিনি। বল ট্র্যাকিং-এ দেখা যায় বল স্টাম্পের ওপর দিয়ে গেছে।
তিনবার জীবন পেয়ে ম্যাচ শেষে ডিসিশন রিভিউ সিস্টেমের (ডিআরএস) প্রশংসাও করেছেন তিনি। নাইট বলেন, ‘এটাই প্রথমবার, যখন আমি একটি ইনিংসে তিনবার আউট হয়েছিলাম এবং তিনবারই রিভিউতে তা পাল্টে গেছে। এটা ছিল মানসিকভাবে নিজেকে স্থির করার একটা পরীক্ষা। আমি জানতাম বল লাগেনি, আর কন্ডিশনও কঠিন ছিল। বল অনেক সুইং করছিল, যা আম্পায়ারদের জন্যও কঠিন করে তোলে। কিন্তু এটাই তো ডিআরএস-এর সৌন্দর্য, তাই না? এটা থাকা সত্যিই দারুণ।’