লঙ্কানদের বিপক্ষে যেখানে ম্যাচ হেরেছে বাংলাদেশ

নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের জয়ের কোন বিকল্প ছিল না। তবে সেই ম্যাচে বাংলাদেশ তীরে এসে তরী ডুবিয়েছে। ব্যাটিং ব্যর্থতায় সহজ জয় হাতছাড়া করে এখন আফসোস করতে হচ্ছে নিগারদের। ম্যাচ শেষে নিগার জানিয়েছেন, ম্যাচের মোমেন্টাম পাল্টে যায় সুপ্তা চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পরই।
মুম্বাইয়ের ডিওয়াই পাতিল স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে সোমবার (২০ অক্টোবর) টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেয় শ্রীলঙ্কা। ৪৮.৪ ওভারে ২০২ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৯৫ রানে থামে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচে লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৪৪ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন শারমিন আক্তার সুপ্তা ও অধিনায়ক নিগার সুলতানা। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার দেখেশুনে টেনে নিচ্ছিলেন দলকে। বিপত্তিটা ঘটে এই জুটিতে যখন ৮২ রান আসে। পায়ে ক্র্যাম্প নিয়ে মাঠ ছাড়েন সুপ্তা। ১০৩ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় ৬৪ রান আসে তার ব্যাট থেকে।
এই প্রসঙ্গে নিগার বলেন, ‘আমি আর সুপ্তা [শারমিন] আলোচনা করছিলাম, যদি আমরা ৩৫ থেকে ৪০ ওভার পর্যন্ত ব্যাট করতে পারতাম, তাহলে হয়তো ম্যাচটা ৫ ওভার বাকি থাকতে শেষ করে ফেলতে পারতাম। কিন্তু একসময় আমরা আটকে যাই, কারণ তখন শুধু এক রান করে আসছিল, কোনো বাউন্ডারি পাচ্ছিলাম না, আর রান রেট বেড়েই যাচ্ছিল।’
নিগার আরও যোগ করেন, ‘ চোট নিয়ে (ক্র্যাম্পের কারণে) সুপ্তার ফিরে যাওয়াটা ছিল গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। আমরা তাদের বোলারদের স্মার্টলি সামলাচ্ছিলাম, প্রতি ওভারে কত রান দরকার— সে বিষয়ে আমাদের পরিষ্কার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু যখন সুপ্তাকে মাঠ থেকে উঠে যেতে হলো, তখনই ম্যাচের মোমেন্টামটা বদলে গেল।’
সুপ্তা চলে গেলে স্বর্ণা আক্তারকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন জ্যোতি। এই জুটিতে আসে ৫০ রান। ২৭ বলে ১৯ রান করে স্বর্ণা ফিরলে হঠাৎই যেন খেয় হারায় বাংলাদেশ। বাড়ে রানরেটের চাপ। শেষ ১২ বলেও ১২ রান লাগতো বাংলাদেশের। কিন্তু ৪৯তম ওভারে তিন রান আসে মাত্র। আর শেষ ওভারে যখন ৯ রান দরকার তখনও হাতে ছিল পাঁচ উইকেট। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটাররা উইকেট হারিয়ে যাওয়া আসার মিছিলে ব্যস্ত।
শেষ ওভারেও অবশ্য ক্রিজে ছিলেন ব্যাট হাতে শ্রীলঙ্কার বোলারদের শাসন করা নিগার। যে কারণে বাংলাদেশ হয়ত জয়ের স্বপ্নই দেখছিল। সেখান পাশার দান উল্টে দেন লঙ্কান অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু। চার বলে চার উইকেট তুলে শেষ করে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। অধিনায়কের হাত ধরে শ্রীলঙ্কা পেয়েছে ৭ রানের নাটকীয় জয়।
ম্যাচ শেষে লঙ্কান অধিনায়ক আতাপাত্তু বলেন, ‘যদি জ্যোতি (নিগার) আরও কিছু বল খেলতো, আমি জানতাম ম্যাচটা আমাদের দিকে আসতো না। তাই আমরা সঠিক সময়ে সঠিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছি। শেষ ওভারে আমি আমার পরিকল্পনাগুলো কার্যকর করেছি। আমি জানি, জ্যোতি ইনসাইড-আউট শটে খুব ভালো, তাই আমরা লং অন ও লং অফে ফিল্ডার রেখেছিলাম। আমি স্টাম্পে আক্রমণ করেছি, তার বিপক্ষে কখনও গতি বাড়িয়েছি, কখনও কমিয়েছি। সে লং অফের ওপরে মারতে গিয়েছিল, আর সেখানেই আউট হয়ে যায়।’