বাংলাদেশি জুবায়ের রহমানের ই-স্পোর্টস দুনিয়া!
সম্প্রতি অনলাইনে মানুষের উপস্থিতি ব্যাপকভাবে বেড়েছে। করোনা মহামারিতে এই বৃদ্ধি আও গতি পেয়েছে। মহামারিতে অনেক কিছু থমকে গেলেও অনলাইনভিত্তিক অনেক প্রতিষ্ঠান ও মাধ্যম জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ব্যাপকভাবে। তেমনই জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো ই-স্পোর্টস। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গেমাররা নির্দিষ্ট কোনো ভিডিও গেমিং টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন। ইস্পোর্টসের ইভেন্টগুলো পুরোপুরি ভার্চুয়ালি হয়ে থাকে।
বাংলাদেশে বিগত বছরগুলোতে ই-স্পোর্টস প্লেয়ার অনেক বেড়েছে। নানারকম নেতিবাচকতা থাকা সত্ত্বেও অনেকে এটিকে নিজের ক্যারিয়ার হিসেবেও বেছে নিচ্ছেন। তেমনি একজন হলেন জুবায়ের রহমান। পেশায় প্রকৌশলী হলেও নিজের ধ্যানজ্ঞানে গেমিং ধারণ করেন সবসময়। ইলেকট্রিক্যাল এবং ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি শেষ করে, বর্তমানে একজন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার এবং এসইও স্পেশালিষ্ট হিসেবে কাজ করছেন তিনি।
বাংলাদেশের ই-স্পোর্টস প্লেয়াররা খুব সহজে অর্থ উপার্জনের দিকে ঝুঁকতে পারে না, সবার কাছে পৌঁছাতে পারাটাও অনেক বড় ব্যাপার। এ ক্ষেত্রে আশার বাণী শুনিয়েছে ‘ফেসবুক গেমিং ভিডিও ক্রিয়েটর’ এবং ‘মেইন গেমস’। যারা ফেসবুকে ভিডিও স্ট্রিমিং করতে পছন্দ করেন তাদের নিয়ে এই দুটি কোম্পানি যৌথভাবে একটা প্রোগ্রাম করার উদ্যোগ নিয়েছে। মেইন গেমস কোম্পানি বাংলাদেশিদের প্রথম ক্রিয়েটর সার্ভিস প্রোভাইডার হিসেবে অফার দিয়েছে।
২০১৭ সালের দিকে যেখানে ই-স্পোর্টস এর নিয়মিত এবং অনিয়মিত দর্শক সংখ্যা ছিলো ৩৩৫ মিলিয়ন, এ বছরের শেষ নাগাদ তা প্রায় ৬৬৫ মিলিয়নে গিয়ে দাঁড়াবে। এতো বিশাল একটা সংখ্যা যারা প্রতিনিয়ত ই-স্পোর্টস সম্পর্কে খোঁজ রাখছেন, তারা জানেন এটি বিশ্বের অন্যতম একটি শিল্প হতে যাচ্ছে। তাছাড়া আমরা যদি ই-স্পোর্টসের রাজস্বের দিকে তাকাই, সেটিও বাড়ছে ব্যাপকভাবে। ২০২২ সালের শেষে ই-স্পোর্টস মার্কেটপ্লেসের রাজস্ব প্রায় ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জুবায়েরসহ বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের অনেকে স্বপ্ন দেখেন এই খাতে কাজ করার। অনেক আগ থেকেই জুবায়েরের ছিল গেমিংয়ের প্রতি ভালো লাগা। সেই শুরু, অফিশিয়ালি বাংলাদেশ পাবজি কমিউনিটির সঙ্গে গত তিন বছর যুক্ত রয়েছেন। ২০২১ সাল থেকে তিনি সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ভিডিও স্ট্রিমিং করা শুরু করেন। ‘জুবি প্লেস’ নামে ফেসবুক এবং ইউটিউব থেকে তিনি লাইভ স্ট্রিমিং করে থাকেন।
শুরু থেকেই নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হতেন। পরিবার কিংবা আত্মীয় স্বজন, সবার একই কথা, এসবের আবার ভবিষ্যৎ আছে নাকি? তা ছাড়া প্রথম দিকে বেশ কম সংখ্যক মানুষজন তার ভিডিও স্ট্রিমিং দেখতেন। এগিয়ে চলার সাহস পেতেন না সেভাবে। কিন্তু পরবর্তীতে ধীরে ধীরে অনেকেই বুঝতে শুরু করেছেন এবং তিনি সবার সহযোগিতায় বর্তমানে একজন অন্যতম ই-স্পোর্টস প্লেয়ার।
জুবায়ের আহমেদ বলেন, ‘দেশে এবং দেশের বাইরের অনেককে দেখে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। সবসময় অনুপ্রাণিত হয়েছি তাদের থেকে, থমকে যাওয়ার কথা মাথায় আসলে তাদের স্ট্রাগল এবং সেরা হয়ে উঠার যাত্রাপথ নিয়ে ভাবতে থাকতাম এবং নিজেকে আবার নতুন উদ্যমে তৈরি করার কাজে নেমে পড়তাম।’