পাসওয়ার্ড হবে মস্তিষ্কের তরঙ্গ
স্মার্টফোনের স্ক্রিন লক থেকে শুরু করে ক্রেডিট কার্ড, সবখানেই নিরাপত্তার জন্য থাকে পাসওয়ার্ড। কিন্তু এই পাসওয়ার্ডই যখন অনাকাঙ্ক্ষিত কারো হাতে চলে যায়, তখন তা সর্বনাশের কারণ হতে পারে। নিরাপত্তাব্যবস্থার মানোন্নয়ন এখন সব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের অগ্রাধিকারের তালিকায় প্রথম। এখন অনেক জায়গাতেই চোখের মণি কিংবা আঙুলের ছাপকে পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করার রীতি চালু আছে। এবার সে তালিকায় যুক্ত হতে যাচ্ছে ব্রেনওয়েভ! এ খবর জানিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গিজম্যাগ।
নিউইয়র্কের বিংহাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক একটি গবেষণার ফলে দেখা গেছে, মানুষের মস্তিষ্কের তরঙ্গ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। ৪৫ জন স্বেচ্ছাসেবকের ওপর চালানো এক পরীক্ষায় দেখা গেছে, বিভিন্ন শব্দভেদে তাঁদের মস্তিষ্ক একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গ পাঠাচ্ছে।
প্রত্যেকের মাথায় তিনটি করে ইলেকট্রোড স্থাপনের মাধ্যমে মস্তিষ্কের এই তরঙ্গ বা ‘ব্রেইনপ্রিন্ট’ সংগ্রহ করা হয়। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর ব্রেইনপ্রিন্ট ছিল আলাদা, কম্পিউটার ৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে সবাইকে শনাক্ত করতে পেরেছে। তবে শনাক্ত করতে সময় লেগেছে প্রায় ছয় মাস।
বিংহাম্পটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান ও ভাষাবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক সারা ল্যাজলো জানালেন মস্তিষ্কের তরঙ্গ পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহারের সুবিধা। তাঁর মতে, ‘কারো আঙুলের ছাপ যদি কোনোভাবে চুরি হয়ে যায়, তবে তার পক্ষে সেটা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। কিন্তু যদি কখনো প্রয়োজন পড়ে, তবে আপনি চাইলেই আপনার ব্রেইনপ্রিন্ট সহজেই পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।’
বিশ্বজুড়ে বাড়ছে সাইবার অপরাধ। আর তার সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে জাগছে উদ্বেগ। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থায় যুক্ত হচ্ছে নিত্যনতুন সব উদ্ভাবন। নিরাপত্তার কাজে চোখের রেটিনা কিংবা হাতের আঙুলের ছাপ বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। তবে প্রযুক্তির সঙ্গে অপরাধীরাও ‘স্মার্ট’ হচ্ছে। তাই ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ব্রেইনপ্রিন্টকে অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য বলছেন গবেষকরা।
তবে এই প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জন্য খুব দ্রুত সহজলভ্য হচ্ছে না। বড় বড় সরকারি প্রতিষ্ঠান কিংবা করপোরেশনের পক্ষেই এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুবিধা পাবেন। গবেষকরা এরই মধ্যে এ প্রযুক্তি নিয়ে অনেকখানি এগিয়েছেন। তাঁদের আশা, পেন্টাগন কিংবা এয়ারফোর্সে খুব দ্রুতই যুক্ত হবে ব্রেইনপ্রিন্ট।