ভিডিও গেম খেলে পড়ালেখা!
খেলতে খেলতে শেখার কথা তো সেই কবেই বলে গেছেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তো এবার সত্যিকার অর্থেই পড়ালেখা হবে খেলতে খেলতে। কিন্তু এমন কোনো স্কুলের কথা কি কল্পনা করা যায়, যেখানে ক্লাসের সময়ে ভিডিও গেমস খেলাকে উৎসাহিত করা হবে? এমনকি পরীক্ষার হলে খাতায় কষ্ট করে লিখতে হবে না, শুধু কষ্ট (!) করে খেলতে হবে ভিডিও গেমস! নতুন একটি শিক্ষামূলক কার্যক্রম নানা রকম সমস্যা সমাধানে শিশুদের সক্ষমতা বাড়াতে ‘সিম সিটি’ নামের একটি জনপ্রিয় স্ট্রাটেজিক গেমস ব্যবহার করছে। ‘গ্লাসল্যাব’ নামের একটি সংগঠন এই অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
গ্লাসল্যাব মূলত শিক্ষক আর প্রযুক্তিবিদদের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত একটি কার্যক্রম। এখানে মূলত বাড়ির কাজের জায়গায় স্থান দেওয়া হচ্ছে ভিডিও গেমসকে। বাণিজ্যিক গেম স্টুডিও এবং শিক্ষাভিত্তিক সংগঠনগুলোকে এক করে বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষার প্রসারই এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য। এই লক্ষ্যেই গেমিং টেকনোলজিকে ব্যবহার করা হচ্ছে শিক্ষা অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে। এমনকি একসময় প্রথাগত পরীক্ষা পদ্ধতিকেও এই মাধ্যমে স্থানান্তরিত করা সম্ভব হতে পারে বলে সংস্থাটির আশা।
যে গেমটি খেলে পড়ালেখার কাজ চলবে শিক্ষার্থীদের, এর নাম SimCityEDU: Pollution Challenge. এটি স্ট্রাটেজিক ভিডিও গেম ‘সিম সিটি’র একটি শিক্ষাভিত্তিক সংস্করণ। কিশোর-কিশোরীদের জন্য উপযোগী করে সাজানো এই গেমে শিক্ষার্থীদের একটি শহরের মেয়রের ভূমিকা পালন করতে হবে। যে শহরে তারা দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তার ভূমিকা পালন করবে। এবং শহরের নানা বিষয় যেমন পরিবেশদূষণ বা যানজট ইত্যাদি সমস্যার সমাধান করবে। প্রথাগত পড়ালেখার বাইরে এই বিনোদনমূলক পদ্ধতিতে শিক্ষাদান করলে স্কুলের ছেলেমেয়েরা সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ সম্বন্ধে ধারণা পাবে। এতে করে শিখতেও পারবে, পাশাপাশি সমাজে গঠনমূলক কাজেও ভূমিকা রাখতে পারবে। এমনটাই বিশ্বাস করছেন উদ্যোক্তারা।
‘গ্লাসল্যাব’-এর মহাব্যবস্থাপক জেসিকা লিন্ডি এই অভিনব পদ্ধতি নিয়ে খুবই আশাবাদী। ভিডিও গেমসের মাধ্যমে এই বিশেষ পড়ালেখা ছেলেমেয়েদের চিন্তাশীল করে তুলবে বলে মনে করেন তিনি। পাশাপাশি তিনি এও মনে করেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে যদি এ রকম যুগোপযোগী করা যায়, তাহলে শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনেও দক্ষ হয়ে উঠবে।