ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন পদ্ধতি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধনকে যুগোপযোগী করার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী সিভিল রেজিস্ট্রেশন ও ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক (সিআরভিএস) ব্যবস্থা গড়ে তোলায় সহযোগিতা করার লক্ষ্যে প্ল্যান ইন্টারন্যাশন্যাল বাংলাদেশ সম্প্রতি একটি কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশন্যাল বাংলাদেশের উদ্যোগে আইটি প্রতিষ্ঠান ইএটিএল এই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। কর্মসূচির প্রথম ধাপে বাংলাদেশে সিভিল রেজিস্ট্রেশন ও ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিক (সিআরভিএস) ব্যবস্থার সামগ্রিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনার জন্য সারা দেশে একটি জরিপ চালানো হয়।
জরিপের ফলাফল ও প্রাপ্ত তথ্য সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্প, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দাতা সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানানো ও মতবিনিময়ের জন্য গতকাল শনিবার গুলশানের একটি হোটেলে দিনব্যাপী সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিজয় ভট্টাচার্য্যের সভাপতিত্বে সেমিনারের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইএটিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ মুবিন খান।
কর্মসূচির উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোকপাত করেন প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সিআরভিএস বিষয়ক প্রধান আরিফুল ইসলাম এবং গবেষণার প্রাথমিক ফলাফলের ওপর নিবন্ধ উপস্থাপন করেন ইএটিএলের প্রধান নির্বাহী ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ।
জরিপের ফলাফলে ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধনের হার ৩.৩% এবং সব মিলিয়ে জন্মনিবন্ধনের হার ৭৬.৫% বলে জানানো হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, বাংলাদেশ জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শেখ মুজিবর রহমান, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমল কান্তি সাহা, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস সেনাইত গেব্রে জিয়াবার, বিশ্বব্যাংক ও ইউনিসেফের প্রতিনিধিরা।

সিআরভিএস গড়ে তোলা গেলে সত্যিকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের উদ্দেশ্য পূরণ হবে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী। মন্ত্রিপরিষদসচিব তাঁর বক্তব্যে দুটি বাস্তব অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে জরিপের ফলাফলের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন এবং সিআরভিএস বাস্তবায়নে সরকারের ইচ্ছা পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মিস সেনাইত জানান, বাল্যবিবাহরোধে ডিজিটাল জন্মনিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এই নিয়ে আরো কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। জরিপের ফলাফল জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজকে আরো গতিশীল করতে সহায়তা করবে বলে জানান জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন প্রকল্পের পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শেখ মুজিবর রহমান।
জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধনের কাজে কমিউনিটি ক্লিনিককে জড়িত করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বিমল কান্তি সাহা। সেমিনারের সভাপতি তাঁর বক্তব্যে জন্মনিবন্ধনের ভালো দিকগুলো জনগণকে অবহিত করার ওপর জোর দেন এবং জন্মনিবন্ধনের জন্য বাবা-মাকে কিছু প্রণোদনা দেওয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান।
সভায় উপস্থিত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, বিশ্বব্যাংক, ইউনিসেফসহ অন্যান্য দাতা সংস্থার প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট সবার সক্রিয় অংশগ্রহণে জরিপের ফলাফল নিয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা হয় যা ভবিষ্যতের ডিজিটাল জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন কার্যক্রমকে যুগোপযোগী করতে সাহায্য করবে।

ফিচার ডেস্ক