সিদ্ধ ডিমকে কাঁচা করা যায় !
সিদ্ধ ডিমকে আবার অসিদ্ধ বা কাঁচা অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা। তাঁদের ধারণা, এই আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভর্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার একদল গবেষক সিদ্ধ ডিমকে কাঁচায় পরিণত করার গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক জর্জ ওয়েস। তাঁদের গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘কেমবায়োকেম’।
গবেষকরা বলেন, একটি ডিমকে সিদ্ধ করা হলে এর প্রোটিন বা সাদা অংশ রাসায়নিক পরিবর্তন হয়ে জটিল গঠনে রূপ নেয়। গবেষকরা জটিল গঠনের এই সিদ্ধ ডিমের এই অংশকে সম্পূর্ণ কাঁচা অবস্থায় নিয়ে এসেছেন।
গবেষকরা ৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ২০ মিনিট সিদ্ধ হওয়া একটি ডিমের সাদা অংশ আলাদা করেন। একটি রাসায়নিক বস্তু যোগ করে সাদা জমাট বাঁধা অংশকে তরলে রূপান্তরিত করা হয়। পরে এই তরলকে ‘ভরটেক্স ফ্লুইড মেশিন’ নামক একটি যন্ত্রে মধ্যে নেওয়া হয়। যন্ত্রটি গবেষক ওয়েজ ও তাঁর সহকর্মীদের তৈরি। এই যন্ত্রে প্রবেশকৃত তরল মিশ্রণটির ওপর অতি সূক্ষভাবে চাপ পড়ে। এতে ডিমের সেদ্ধ হওয়া সাদা অংশ সম্পূর্ণ পরিবর্তিত হয়ে আগের কাঁচা অবস্থার পরিণত হয়।
গবেষকরা বলেন, প্রোটিনের গঠনে পরিবর্তনকে আবার পূর্বের অবস্থায় ফেরানোর বর্তমান পদ্ধতিগুলো ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ। সেখানে তাঁদের পদ্ধতি কম সময়ে পরিবর্তিত প্রোটিনের রূপান্তর ঘটাতে পারে।
লাইভ সায়েন্সকে গবেষকরা জানান, নতুন পদ্ধতিটি ক্যানসার চিকিৎসার গবেষণায় ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে শুরুতেই ক্যানসার শনাক্ত করা সহজ হবে। একই সঙ্গে ক্যানসারের চিকিৎসা পদ্ধতিতেও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা সম্ভব। আরো গবেষণা করা হলে ক্যানসার নিরাময়ের হারও বাড়ানো সম্ভব। ক্যানসার নিরাময়ে থেরাপির খরচও কমতে পারে। এ ছাড়া মস্তিষ্কের ক্ষত চিকিৎসায়ও নতুন আবিষ্কার কাজে লাগতে পারে।
গবেষকরা আরো জানান, কৃষি খাত ও খাদ্য পক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের উন্নয়নেও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে।
গবেষক ওয়েজ বলেন, প্রাথমিকভাবে ক্যানসারের গবেষণাকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে কৃষি ও খাদ্য পক্রিয়াজাত শিল্পেও নতুন আবিষ্কারের প্রয়োগ নিয়ে গবেষণা প্রয়োজন। এসব গবেষণায় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসতে হবে।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে প্রোটিন রূপান্তরের নতুন পদ্ধতিটির প্রয়োগ সফল হলে বিশ্বের ১০০ কোটির বেশি মানুষের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে।