বড় আকারের পান্ডার জীবনের রহস্য
বড় আকৃতির পান্ডার জীবন নিয়ে অনেক রহস্য আছে—যার একটি হলো এরা একা একা থাকতে পছন্দ করে। এই প্রাণীদের জিনের মধ্যেই এই নিঃসঙ্গতা ঢুকে গেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকরা এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করেন।
সাম্প্রতিক এক গবেষণার ভিত্তিতে দেশটির গবেষকদের দাবি, বাঁশভূখ পান্ডা আসলে ততটা একাকী থাকে না।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক বড় আকৃতির পান্ডার জীবনযাপন নিয়ে গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক ভ্যানেসা হাল। এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘জার্নাল অব ম্যামালজি’।
বড় আকৃতির পান্ডা বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী। চীনে বুনো পরিবেশে এখনো এক হাজার ৮০০-এর মতো বড় পান্ডা দেখা যায়।
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের উলং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাঁচটি বড় আকৃতির পান্ডা নিয়ে গবেষণা করা হয়। পান্ডাগুলোর মধ্যে তিনটি ছিল নারী ও একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ এবং একটি কমবয়স্ক মেয়ে। জিপিএস কলার ব্যবহার করে ২০১০-১২ সাল পর্যন্ত দুই বছর পান্ডাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়। গবেষণা আরো দীর্ঘায়িত হওয়ার কথা থাকলেও চীন সরকারের পদক্ষেপের কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। দেশটিতে ওই সময় ট্রাকিং কলার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়।
গবেষক জিনডং জাং বলেন, নারী ও পুরুষ পান্ডা নিয়ে গবেষণায় এই প্রাণীদের জীবনযাপন রহস্য উন্মোচনের সুযোগ পাওয়া যায়। মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক ভেনেসা হল বলেন, পান্ডা এতটাই গহিন বনে লুকিয়ে থাকে যে এদের সঠিক অবস্থান সম্পর্কে সব সময় তথ্য পাওয়া যায় না।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উলং সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাঁচটি বড় আকৃতির পান্ডা খাবারের জন্য বাঁশ লাগানো আছে এমন ৩০টি স্থানে ঘুরে বেড়ায়। শরৎকালে পান্ডাগুলো একসঙ্গে বিচরণক্ষেত্রে আসে।
গবেষকদের মতে, পূর্ণ বয়স্ক নারী পান্ডার কাছাকাছি পুরুষ পান্ডাকে স্বতঃস্ফূর্তই দেখা যায়। আর সব পান্ডাকে একসঙ্গে বেশ বন্ধুভাবাপন্ন মনোভাবই মনে হয়। প্রাণীগুলোর মধ্যে নিজেদের এলাকা দখলে রাখার কোনো মনোভাব দেখা যায় না। এর আগে বড় পান্ডা সম্পর্কে ধারণা করা হতো, এরা একাকী থাকা পছন্দ করে এবং অন্যদের সঙ্গে বন্ধুভাবাপন্ন নয়। গবেষকরা জানান, পান্ডার জীবন-যাপন নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
গবেষক হাল আশা করেন, চীনা সরকার পাণ্ডা গবেষণায় আরো গুরুত্ব দেবে এবং এদের জীবন-যাপন নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখবে।