বিস্ময় থেকে শেখে শিশু
বিস্ময়ের মধ্য দিয়ে শিশুরা ভালো শেখে। কোনো ঘটনা যেভাবে হয় বলে শিশুরা জানে, এর পরিবর্তনই তাদের কাছে বিস্ময়ের। অস্বাভাবিক কিছুর প্রতি শিশুদের বেশি আগ্রহ থাকে বলে বিষয়টি তারা ভালোভাবে শেখে। যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক সম্প্রতি এই দাবি করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক শিশুদের শেখার আগ্রহ নিয়ে গবেষণা করেন। এতে যুক্ত ছিলেন অ্যামি ই স্টাল ও লিসা ফেইজেনসন নামের দুজন গবেষক। এ-সংক্রান্ত গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ‘সায়েন্স’।
গবেষকদের মতে, চারপাশের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে শিশুরা নিজের মতো করে ধারণা রাখে। এই ধারণার বাইরে কোনো কিছু ঘটলে তাদের মধ্যে শেখার প্রতি বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়। এ জন্যই তারা ভালোভাবে শেখে।
শিশুদের বিভিন্ন খেলনা ও রঙিন বস্তু দিয়ে পরীক্ষা সাজানো হয়। এটি এমনভাবে সাজানো হয় যেন শিশুদের ধারণার বাইরে ঘটনা ঘটে। যেমন কোনো খেলনা গাড়ি শূন্যের ওপর দিয়ে চলছে। ধারণার বাইরের কোনো বিষয় দেখে শিশুরা এর প্রতি প্রচণ্ড আগ্রহী হয়ে ওঠে।
১১ বছর বয়সী কয়েকটি শিশুকে দুই দলে ভাগ করে গবেষণা চালানো হয়। একটি দলকে দেখানো হয় তাদের দৃষ্টিতে স্বাভাবিক ঘটনা। অপর দলকে ঘটনাটি অস্বাভাবিকভাবে দেখানো হয়।স্বাভাবিকভাবে ঘটনা দেখা শিশুদের চেয়ে অস্বাভাবিকভাবে ঘটনা দেখা শিশুদের মধ্যে এটি জানার প্রতি বেশি আগ্রহ চোখে পড়ে। মজার বিষয় হলো ভিন্নভাবে ঘটনা দেখা শিশুরা ঘটনাটির রহস্য নিজেই আবিষ্কার করতে চায়। যেমন শূন্যে ভাসা গাড়ি তারা নিজ হাতেই যাচাই করে দেখতে চায়। সেটি টেবিলে সজোরে বাড়ি দিয়ে তারা ভেঙে দেখার চেষ্টা করে।
গবেষক লিসা ফেইজেনসন বলেন, শিশুদের কাছে পৃথিবী একটি জটিল বিষয়, তাদের কাছে এটি গতিশীল উদ্দীপনায় ভরা। গবেষণার লক্ষ্য ছিল শিশুরা কীভাবে শেখে, তাদের আগ্রহ তৈরি হওয়া, কোন বিষয় সম্পর্কে জানার বেশি আগ্রহ আবার কোন বিষয় সম্পর্কে আগ্রহ না থাকা ইত্যাদি সম্পর্কে জানা। গবেষণায় দেখা যায়, কোনো বিষয় সম্পর্কে শিশুদের মধ্যেই একটি ধারণার জন্ম নেয়। কিন্তু এই ধারণার বাইরে কোনো ঘটনা ঘটলে তারা বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠে। তারা বিষয়টি সম্পর্কে গভীরভাবে শেখে। তবে সব সময়ই শিশুদের মধ্যে পৃথিবীকে বোঝার চেষ্টা অব্যাহত থাকে।