ইঁদুর শোনায় ভালোবাসার গান!
ভালোবাসার মানুষটিকে আকৃষ্ট করতে গান শোনান অনেক নারী-পুরুষ। এই রেওয়াজ প্রাণিকূলের মধ্যেও আছে। বিস্ময়কর তথ্য হলো, ইঁদুরও গান গায়। স্ত্রী ইঁদুরকে আকৃষ্ট করতে ভালোবাসার গান শোনায় পুরুষ ইঁদুর।
প্রশ্ন আসে ইঁদুর কীভাবে গান শোনায়? গন্ধ থেকে স্ত্রী ইঁদুরের উপস্থিতি টের পেয়েই পুরুষ ইঁদুর মানুষের শ্রবণশক্তির চেয়েও জোরে (শ্রবণোত্তর) শব্দ সৃষ্টি করে। স্ত্রী ইঁদুর দেখার পরে এই আওয়াজের মাত্রা বেড়ে যায়। শব্দের তারতম্যের মাধ্যমে সে স্ত্রী ইঁদুরকে গান শোনায়।
যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক ইঁদুরের গান গাওয়া ও বিপরীত লিঙ্গের ইঁদুরকে আকৃষ্ট করার বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক এরিক জারভিস। এ-সংক্রান্ত গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে বিজ্ঞান সাময়িকী ফ্রনটিয়ারস অব ‘বিহ্যাভিওরাল নিউরোসায়েন্স’।
গবেষকরা পুরুষ ইঁদুরের গান রেকর্ড করেন। পরে এর সঙ্গে গানের গায়কপাখির তুলনা করেন। গবেষকরা বলেন, পাখির চেয়ে ইঁদুরের শব্দ সৃষ্টির ক্ষমতা সীমিত। এরপরও ইঁদুরের গানে বেশ বৈচিত্র্য দেখা যায়। স্বরের তারতম্য ও শব্দের তীব্রতা ব্যবহার করে ইঁদুর এর গানে বৈচিত্র্য আনে।
গবেষকরা বলেন, ইঁদুরের শব্দ অনেক ক্ষেত্রে ৫০ কিলোহার্টজের মতো হয়। এটি মানুষের শ্রবণের সীমার বাইরে। এর তীব্রতা কমিয়ে আনলে একে পাখির কিচিরমিচিরের মতো শোনায়।
গবেষক এরিক জারভিস বলেন, প্রাণিকূলের ভাব বিনিময় ব্যবস্থা মানুষের ধারণার চেয়েও জটিল ও উন্নত। গবেষণায় ইঁদুরের গান গাওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা কোনোভাবেই কয়েকটি কিচ কিচ শব্দে সীমাবন্ধ নয়।
গবেষকরা বলেন, পুরুষ ইঁদুর গানের মাধ্যমে স্ত্রী ইঁদুরকে নিজের প্রতি আগ্রহী করে তোলার চেষ্টা করে। জটিলতর শব্দের মাধ্যমে তারা আকৃষ্ট করার চেষ্টা অব্যাহত রাখে। একই সঙ্গে এটি পুরুষ ইঁদুরের জন্য পৌরুষত্বের প্রকাশও। পুরুষ ইঁদুর জোরে ও জটিল শব্দ সৃষ্টির মাধ্যমে স্ত্রী ইঁদুরের কাছে নিজের পৌরুষত্বও জাহির করে।