যুক্তরাজ্যের অর্ধেক মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হবে
যুক্তরাজ্যের প্রতি দুজনের একজন জীবনের কোনো একসময়ে ক্যানসারের চিকিৎসা নেবেন। গতকাল ৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার ক্যানসার দিবসে এই ভয়াবহ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির গবেষকরা। তাঁদের হিসাবে যুক্তরাজ্যের ৫৪ শতাংশ পুরুষ ও ৪৮ শতাংশ নারী ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে।
যুক্তরাজ্যের ক্যানসার গবেষণা সংস্থা জানিয়েছে, তাদের নতুন হিসাব অনুযায়ী দেশটির প্রতি তিনজনের একজনের মধ্যে ক্যানসার বাসা বাঁধছে। গবেষকদের মতে, মানুষের আয়ু বেড়ে যাওয়ার অর্থ হলো ক্যানসার আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়ে যাওয়া।
যুক্তরাজ্যের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক দেশটির মানুষের মধ্যে ক্যানসার বেড়ে যাওয়ার হার নিয়ে গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষক পিটার সাসিয়েনি।
গবেষকরা বলেন, যুক্তরাজ্যে হৃদরোগ ও সংক্রমণে মৃতের হার কমেছে। তবে এর মানে মানুষের মধ্যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে গবেষক পিটার সাসিয়েনি বলেন, স্থূলতা, লাল মাংস খাওয়া বৃদ্ধি ও ধূমপানের কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ছে।
ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি নারীদের মধ্যে এখনো বাড়ছে। নারীদের মধ্যে স্তন ও আর পুরুষের মূত্রথলি ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার হার বৃদ্ধি একই। তবে নির্দিষ্ট কয়েক ধরনের ক্যানসারের হার অধিক হারে, যার একটি হলো খাদ্যনালির ক্যানসার। এর মূল কারণ স্থূলতা। আর বিভিন্ন ভাইরাসের কারণে বাড়ছে মাথা ও ঘাড়ের ক্যানসার। যৌনকাজে মুখ ব্যবহার করার কারণেও যুক্তরাজ্যের মানুষের মধ্যে কয়েকটি বিশেষ ধরনের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে।
পিটার সাসিয়েনির মতে, ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ছে, তবে এটি কমানো অসম্ভব নয়। হার কমাতে অনেক কিছুই করার আছে। ওজন কমানো ও ধূমপান ছাড়ার মতো জীবনযাপনের পদ্ধতিতে কয়েকটি পরিবর্তনই ক্যানসার আক্রান্তের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে।
গবেষকদের মতে, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ক্যানসারের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০-এ নামিয়ে আনতে পারে।
গবেষকরা একটি ইতিবাচক বিষয়ও জানিয়েছেন, ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়লেও ক্যানসার নিরাময়ের হারও বাড়ছে।
গবেষকরা জানিয়েছেন, তাঁদের হিসাবে হঠাৎ করেই ক্যানসারের ঝুঁকি এতটা বেড়ে যাওয়া নিয়ে নিজেরাই শঙ্কিত। তাঁরা ক্যানসারের ঝুঁকি হিসাবের জন্য আরো নিখুঁত ও কার্যকর পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন। তবে হিসাবের নতুন-পুরোনো সব পদ্ধতিতেই কারো ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ার বিষয়টি স্পষ্ট।
গবেষক পিটার সাসিয়েনি বলেন, যুক্তরাজ্যের মানুষ তাদের হিসাব ভুল প্রমাণিত করলে সবচেয়ে খুশি হবেন তিনি নিজে।