চীনে অ্যাপলের অগ্নিপরীক্ষা
পণ্য নিয়ে অ্যাপলকে একটু বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে চীনে। অ্যাপলের আইফোন, আইপ্যাড, ম্যাক কম্পিউটার ইত্যাদির মাধ্যমে গোয়েন্দাগিরি হতে পারে চীনা নাগরিকদের ওপর—এমন সন্দেহের তীর এখন অ্যাপলের দিকে। কাজেই নিরাপত্তার খাতিরে অ্যাপলের পণ্য সতর্কভাবে যাচাই করবে চীনা সরকার।
গোপন কোনো প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই পণ্যগুলোর মাধ্যমে নাগরিকদের ওপর নজরদারি করা হচ্ছে কি না, সে বিষয়টিই খতিয়ে দেখবে দেশটির সরকার। এদিকে, চীনের এমন সিদ্ধান্তে আপত্তি না জানিয়ে অ্যাপল এ কার্যক্রমে পূর্ণ অনুমোদন দিয়েছে বলে জানা গেল ম্যাশেবলের খবরে।
অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা টিম কুক চীনের রাষ্ট্রীয় ইন্টারনেট তথ্যবিষয়ক দপ্তরের এ আবেদন মঞ্জুর করেছেন। দপ্তরটির পরিচালক লু ওয়েইর সঙ্গে টিম কুকের এরই মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘বেইজিং নিউজ’। বৈঠকে লু ওয়েইকে কুক জানিয়েছেন, গোপন নজরদারির গুজব শোনা গেলেও এ নিয়ে চীনের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। নিরাপত্তা-সংক্রান্ত বিষয়ে অ্যাপল কখনোই নীতি ভঙ্গ করে না বা গ্রাহকের কোনো তথ্য তৃতীয় পক্ষের কাছে সরবরাহ করে না বলে দাবি করেন কুক। তাঁর এ বক্তব্যের সাপেক্ষে লু ওয়েই জানান, নিরাপত্তা-সংক্রান্ত যাচাই পরীক্ষার পরই বিপণন কার্যক্রম চালাতে পারবে অ্যাপল। এ প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধান এবং পরিচালনা করবেন চীনা কর্মকর্তারা।
আইফোন, আইপ্যাড ও ম্যাক কম্পিউটারের ওপর এই নিরাপত্তা যাচাই কার্যক্রমকে অনুমোদন না দিয়ে উপায় কী! চীনের বাজার হারালে অ্যাপলের আয় কমে যাবে কয়েক গুণ! কাজেই চীনে বিপণন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে বাধ্য হয়েই এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে হয়েছে অ্যাপলের।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে আইফোন-৬ মুক্তি পাওয়ার পরপরই চীন সরকারকে পণ্য-সংক্রান্ত নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চিত করে অ্যাপল।
এর আগে চীনের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করা হয়, পণ্য দিয়ে নাগরিকদের অবস্থানের ওপর নজরদারি চালাচ্ছে অ্যাপল। ‘ফ্রিকোয়েন্ট লোকেশনস’ নামে একটি ফিচারের মাধ্যমে এই কার্যক্রম চালায় অ্যাপল—এমন দাবি করা হয় ওই অনুষ্ঠানে। চীনা সরকার এতেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে এবং বিষয়টি খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেয়।
অ্যাপল পণ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় একটি বাজার চীন। তবে অ্যাপলের মতোই বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠানের প্রতি এমন অবিশ্বাস প্রদর্শন চীনের জন্য নতুন কিছু নয়। আইবিএম ও সিসকোর মতো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ এনেছিল চীন।