বায়ু দূষণে মস্তিষ্কের ক্ষতি ও হৃদরোগের ঝুঁকি
বায়ু দূষণ বৃদ্ধির কারণে মস্তিষ্কের আকৃতি হ্রাস পায়। আর এর ফলে হৃদরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। নতুন এক গবেষণার ভিত্তিতে বায়ু দূষণের সঙ্গে মানুষের মস্তিষ্কের আকৃতির নিবিড় সম্পর্কের এসব তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষক।
যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ডের টিএইচ চ্যান পাবলিক স্কুল অব পাবলিক হেলথ ও বোস্টনের বেথ ইসরায়েল ডিয়াকোনেস মেডিকেল সেন্টারের গবেষকরা বায়ু দূষণের সঙ্গে মস্তিষ্কের আকৃতি হ্রাসের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেন।
গবেষকরা এক হাজার রোগাক্রান্ত মানুষের ওপর গবেষণা করেন। এসব রোগীর মস্তিষ্ক স্ক্যান করে ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখা হয়। এতে দেখা যায় কম বায়ু দূষণ বা দূষণহীন আবহাওয়া থাকাদের চেয়ে দূষণের মধ্যে থাকা রোগাক্রান্তদের মস্তিষ্কের আকৃতি বেশি হ্রাস পেয়েছে। কম বায়ু দূষণে দীর্ঘ সময় উপস্থিরি কারণেও মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রোগীদের সবার বয়স ছিল ৬০ বা তদূর্ধ্ব। আর স্ট্রোক ও স্মৃতিহারোনো রোগীদের এই পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাতাসে দুই মাইক্রোগ্রাম (এক গ্রাম= দশ লাখ মাইক্রোগ্রাম) ধাতব কণার উপস্থিতি বৃদ্ধির কারণে মানুষের মস্তিষ্কের ঘনত্ব কমে দশমিক ৩২ শতাংশ।
গবেষকরা বলেন, দূষিত বায়ুর মধ্যে দীর্ঘ সময় উপস্থিতির কারণে মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যায়। এমনকি অত্যন্ত কম দূষণেও দীর্ঘ সময় উপস্থিতির কারণে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়। অত্যন্ত দূষিত বায়ুতে দীর্ঘদিন বসবাসকারীদের মস্তিষ্কের মধ্যকার ঘনত্ব ও আকৃতি অন্যদের তুলনায় বেশ কম।
এর আগে গবেষণায় দেখা গেছে, মস্তিষ্কের আকৃতি ও ঘনত্ব হ্রাসের কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। আরো জানা যায়, মস্তিষ্কের আকৃতি হ্রাসে ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
গবেষকরা জানান, বায়ু দূষণের কারণে মানুষের মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অংশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন। একই সঙ্গে শরীরের ক্ষতি রোধে এবং বায়ু দূষণ কমানো নিয়েও গবেষণা হওয়া উচিত।