কাগজে উইকিপিডিয়া পড়তে কাটতে হবে আট হাজার গাছ!
ইন্টারনেটে মানুষ প্রতিদিন হাজার হাজার ঘণ্টা কাটিয়ে দিচ্ছে। কাগজ থেকে মানুষের নজর চলে এসেছে কম্পিউটার, ট্যাব বা স্মার্টফোনের স্ক্রিনে। তারপরও অনেকে কাগজ পড়ার অভ্যাস ছাড়তে পারেননি। ইন্টারনেটে এই যে অসংখ্য তথ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এগুলো সব যদি কাগজে ছাপানো হয় তাহলে কতগুলো পৃষ্ঠা লাগতে পারে ব্যাপারটা কখনো ভেবে দেখেছেন?
আপনাকে আর কষ্ট করে এ নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না। লন্ডনের একদল গবেষক আপনার হয়ে এই কাজ সমাধা করে ফেলেছেন। ইংল্যান্ডের ল্যাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্র জর্জ হারুদ ও ইভাঞ্জেলিন ওয়াকার হিসাব করে বের করেছেন পুরো ইন্টারনেটের সব তথ্য যদি আপনি কাগজে প্রিন্ট দিতে চান তাহলে ৪x১১ সাইজের ১৩৬০ কোটি কাগজ লাগবে!
উদাহরণ হিসেবে উইকিপিডিয়ার ইংরেজি কনটেন্টের হিসাব কষে দেখিয়েছেন তাঁরা। উইকিপিডিয়া থেকে লটারি করে ১০টি আর্টিকেল বেছে নিয়েছেন তাঁরা। তারপর হিসাব করে দেখেছেন প্রত্যেকটি আর্টিকেল প্রিন্ট করতে ১৫টি করে কাগজ লাগবে।
এই হিসাবকে কাজে লাগিয়ে তাঁরা আরো হিসাব করে দেখিয়েছেন ইন্টারনেটে ইংরেজিতে উইকিপিডিয়ার মোট ৪৭ লাখ ২৩ হাজার ৯৯১টি পাতা রয়েছে। এগুলো সব প্রিন্ট দিতে লাগবে সাত কোটি আট লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৫টি কাগজ।
টেক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এসব খবর জানানো হয়েছে। গবেষকদ্বয় বলছেন, পুরো ওয়েব দুনিয়ার সবকিছু মিলিয়ে সাড়ে ৪০০ কোটি লেখা রয়েছে। এসব লেখার ফন্ট ছোট-বড় রয়েছে।
সব লেখা প্রিন্ট দিতে যে পরিমাণ কাগজের দরকার হবে, সেটির জোগান দিতে কাটতে হবে গাছ। গবেষকরা এত পরিমাণ গাছের জন্য নজর দিয়েছেন গহীন জঙ্গল অ্যামাজনের দিকে। অ্যামাজন জঙ্গলের প্রতি বর্গকিলোমিটারে নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা রেখে ৭০ হাজার ৯০৯টি গাছ লাগানো যাবে।
প্রত্যেকটি গাছ থেকে ১৭ রিম কাগজ উৎপাদন করা যাবে। প্রতি রিম থেকে আসবে ৫০০টি আলাদা কাগজ। সে হিসাবে অ্যামাজনের প্রতিটি গাছ থেকে সাড়ে আট হাজার পাতা কাগজ পাওয়া যাবে।
সেই হিসাবে উইকিপিডিয়ার সাত কোটি আট লাখ ৫৯ হাজার ৮৬৫ পাতা প্রিন্ট দিতে এক লাখ ৪১ হাজার ৭২০ রিম কাগজের দরকার হবে। আর সে জন্য কাটতে হবে আট হাজার ৩৩৭টি গাছ!
এই হিসাবে পুরো ওয়েবের সবকিছু প্রিন্ট দিতে এক হাজার ৩৬০ হাজার কোটি কাগজের জন্য এক কোটি ৬০ লাখ গাছ কাটতে হবে। আপাতত এই হিসাব করেই ক্ষান্ত দিয়েছেন গবেষকদ্বয়। কত ঘণ্টা, কত কালি বা কতজন মানুষ লাগবে সব প্রিন্ট দিতে- এ হিসাব আর করা হয়নি। এতটুক হিসাব করেই তারা বুঝে গেছেন কাগজের চেয়ে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে!