‘মানুষ হয়েছে যন্ত্রের পোষা প্রাণী’

মানুষ যন্ত্রকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ করেছে। যন্ত্রের পোষা প্রাণীতে পরিণত হয়েছে মানুষ। স্কুলে শ্রেণিকক্ষে কম্পিউটার দিলেই বাচ্চারা বুদ্ধিমান হয় না। বরং এতে একটি শিশুর মেধা ও সৃজনশীলতা নষ্টের ঝুঁকি তৈরি হয়। এগুলো প্রযুক্তিবিদ্বেষী কারো কথা বলে মনে হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কথাগুলো বলেছেন বিখ্যাত প্রযুক্তিবিদ ও প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াক।
গত শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে এক বক্তৃতায় বর্তমান সময়ে মানুষের জীবনে প্রযুক্তির অবস্থান বিষয়ে নিজের দর্শন তুলে ধরেন স্টিভ ওজনিয়াক।
অ্যাপলের সহপ্রতিষ্ঠাতার মতে, যন্ত্রের হাতে মানুষ পরাজিত হয়েছে আরো ২০০ বছর আগেই। অ্যাপল ওয়াচের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, এটি সত্যিই অদ্ভুত যে, নিজের ঘড়ির সঙ্গে কথা বলার জন্য মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। এখনো কি মনে হয় মানুষই যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করছে?
ওজনিয়াক বলেন, যন্ত্রকে নিয়ন্ত্রকের আসনে বসার এই অবস্থা তৈরির জন্য মানুষই দায়ী। তিনি বলেন, মানুষ যন্ত্রকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। এর ফলে যন্ত্রের পোষা প্রাণীতে পরিণত হয়েছে মানুষ। মানুষের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সবচেয়ে বড় ঝুঁকি বলে মনে করেন ওজনিয়াক।
মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রেই কম্পিউটারকে আহামরি প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন না ওজনিয়াক। ম্যাসাচুসেটসের বক্তৃতায় তিনি বলেন, অনেক স্কুলে কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে শিশুদের মধ্যে ভালো চিন্তাধারা সৃষ্টি সম্ভব হয়নি। মেধাবী শিক্ষার্থীদের এর মাধ্যমে সামনে আনাও সম্ভব হয়নি। কম্পিউটার কাউকে সৃজনশীল করা যায় না বলেই মনে করেন ওজনিয়াক।
স্টিভ ওজনিয়াক বলেন, কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণাধীন বিশ্বে একটি পর্যায়ে হয়তো আমাদের শরীরে যন্ত্র বসানো শুরু হবে। দেরি হওয়ার আগেই একটি প্রশ্নের উত্তর জানা প্রয়োজন—এতে কি মানুষ সুখী হবে?