রোবট প্রযুক্তি ব্যবহারে দ্রুত এগোচ্ছে চীন
একেবারে হালনাগাদ প্রযুক্তির না হলেও, চীনের রোবট শিল্প বাকি বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেশ দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। বেইজিং চাইছে জীবনের সব ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার নিশ্চিত করতে। এছাড়া, দেশটির আর কোনো উপায়ও নেই।
চীনের রোবট শিল্প একেবারে সর্বাধুনিক না হলেও, তারা দ্রুতগতিতে উন্নতি করছে। বেইজিং শুধু অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য নয়, রোবট প্রযুক্তিকে রপ্তানিযোগ্য করার দিকেও নজর দিচ্ছে।
বেইজিংয়ের পাঁচ বছর মেয়াদি রোবোটিক্স পরিকল্পনা ২০২৫ সালে শেষ হচ্ছে। রোবট শিল্পে শীর্ষস্থান অর্জনের লক্ষ্যে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। কৃষি থেকে কলকারখানা—জীবনের সর্বত্র রোবটের ব্যবহার দেখতে চায় চীনা সরকার। এ ছাড়া দেশটির আর কোনো বিকল্পও নেই। কর্মক্ষম জনসংখ্যা ক্রমেই কমে যাওয়ায় ভবিষ্যতে রোবট ব্যবহার অপরিহার্য হয়ে উঠবে।
এস-এইচ রোবোটিক্সের কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষক শাওং ইয়া বলেন, ‘চীনের অধিকাংশ কৃষকের বয়স ৫০ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে। ফলে ২০ বছর পর খামারের জন্য কর্মী খুঁজে পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ, অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রজন্ম দুর্বল কাজের পরিবেশ পছন্দ করে না, এবং বেতনও তুলনামূলকভাবে কম।’
এই রোবট এনভিডিয়া চিপ ব্যবহার করে। নির্মাতাদের আশা, এটি ইউরোপের কোনো এক মাঠে জায়গা করে নেবে। দ্য চায়না রোবট ইন্ডাস্ট্রি অ্যালায়েন্স-এর হিসেব অনুযায়ী, দেশটির এখন পর্যন্ত রোবট রপ্তানির হার পাঁচ শতাংশেরও কম।
‘মেড ইন চায়না’ লেবেল দেখলে অনেক ক্রেতা সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন—যতক্ষণ না তারা রোবটটির প্রকৃত সক্ষমতা বুঝতে পারেন।
ফরোয়ার্ড এক্স ইউরোপ-এর বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার জ্যাকব লিশ বলেন, “ট্রেড শোগুলোতে গেলে দেখা যায়, ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে একই ধরনের সংস্করণ নিয়ে অনেক নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী হাজির হচ্ছে। চীন অনেক উদ্ভাবন নিয়ে এগিয়ে আসছে। কখনো কখনো পৃথিবীর তাতে অভ্যস্ত হতে সময় লাগছে। তবে আমি মনে করি, আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে।”
দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রোবোটিক্সের র্যাংকিং অনুযায়ী, শিল্পখাতে ব্যবহার উপযোগী রোবট তৈরিতে চীনের অবস্থান ২০২৩ সালে ছিল তৃতীয়। এই অবস্থান জার্মানির চেয়েও ভালো। মাত্র চার বছরের মধ্যে শিল্পখাতের রোবট তৈরির সক্ষমতা দ্বিগুণ করেছে চীন।
আর পশ্চিমা দেশের তুলনায়, বেইজিং রোবটিক্সে বড় এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে সক্ষম। দেশটির প্রযুক্তিগত অগ্রগতির হিসেব রাখাও এখন অনেকের পক্ষেই কঠিন হয়ে পড়েছে।

                  
                                                  ডয়চে ভেলে