আইএসে যোগ দিয়ে শামীমা বেগম ‘অনুতপ্ত’, লড়তে চান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে

Looks like you've blocked notifications!
যুক্তরাজ্য থেকে সিরিয়ায় গিয়ে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগদান করেন শামীমা বেগম। ছবি : সংগৃহীত

কিশোর বয়সে জঙ্গী সংগঠন ইসলামিক স্টেটে (আইএস) যোগ দিতে দেশ ছাড়ার জন্য শামীমা বেগম এখন ‘অনুতপ্ত’। নিজের জীবনের সেই ভুল শুধরাতে এখন সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাজ্যকে সহায়তা করতে চাইছেন তিনি।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এই নারী বলেছেন, তিনি তার জীবনকে মানুষের জন্য কাজে লাগাতে চান, শরণার্থী শিবিরে ‘পচে’ মরে তা অপচয় করতে চান না।

বিবিসি সাউন্ডস এবং বিবিসি ফাইভ লাইভকে আলাদাভাবে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের এখনকার অনুভূতি তুলে ধরেন তিনি।

শামীমা কিশোর বয়সে আইএসে যোগ দিতে লন্ডন থেকে পাড়ি জমিয়েছিলেন সিরিয়ায়। আইএসের খেলাফতের পতনের পর ধরা পড়েন। তবে তার যুক্তরাজ্যে ফেরার পথ হয়েছে বন্ধ। আইনি লড়াইয়েও সেই পথ খোলেনি।

২২ বছর বয়সী শামীমা এখন সিরিয়ার একটি শরণার্থী শিবিরে রয়েছেন। শামীমার বিরুদ্ধে আইএসের হয়ে সক্রিয় তৎপরতা চালানোর অভিযোগ রয়েছে; যদিও তিনি তা অস্বীকার করে আসছেন।

কীভাবে আইএসের মতো একটি দলে যোগ দিয়েছিলেন, যারা গণহত্যা চালিয়েছিল, এখন সেটা ভাবলে কী মনে হয় – বিবিসির এই প্রশ্নে শামীমা বলেন, ‘সেটা চিন্তা করলেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। নিজের উপরই ঘৃণা জন্মায়।’

আইএসের খেলাফতের পতন হওয়ার পরই কি এটা মনে হচ্ছে- এই প্রশ্নে তার উত্তর, ‘অনেক দিন ধরেই আমি এমন চিন্তা করছিলাম। হয়ত এখন আমি খোলাখুলিভাবে বলিতে পারছি।’

শামীমা বলছেন, তিনি যুক্তরাজ্যে ফিরতে চান। আর সেই ফেরাটা কাজেও লাগাতে চান ‘সমাজের জন্য’।

তিনি বলছেন, কী কৌশলে আইএস দলে নতুন সদস্য ভেড়ায়, তার পরিণতি কী হতে পারে, সে বিষয়ে তিনি সবাইকে বোঝাতে পারবেন।

এখন সেই ‘দায়বদ্ধতা’ অনুভব করার কথাও বলেন এই নারী। তার ভাষায়, যে মোহে তিনি তার কৈশোর-তারুণ্য জলাঞ্জলি দিয়েছেন, নতুন করে কারও যেন তা না হয়।

শামীমা বলছেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের ‘সম্পদ’ হয়ে উঠতে পারেন, যদি তাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়।

‘আমি জানি, কিছু মানুষ আছে, যারা আমাকে বিশ্বাস করবে না। বিশ্বাস করবে না যে আমি বদলে গেছি। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমি সত্যিকারভাবেই সহযোগিতা করতে চাইছি।’

যুক্তরাজ্যে ফেরার আকুতি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে বলছি, সিরিয়ায় যাওয়ার সময় আমি যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলাম, সেগুলোর জন্য এখন আমার ভীষণ রকমের আফসোস হচ্ছে। এটা আমাকে সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে।’

‘আমি এখন আমাকে যতটা ঘৃণা করি, অতটা বোধ হয় অন্য কেউ করে না। আমি শুধু বলতে পারি, আমি খুবই দুঃখিত, দয়া করে আমাকে আরেকবার সুযোগ দিন।’