আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে সংঘর্ষ : হাজারো মানুষ বাড়িঘর ছাড়া

Looks like you've blocked notifications!
আফগানিস্তানের বামিয়ান প্রদেশে সংঘর্ষের কারণে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়া মানুষজন। ছবিটি ১৫ জুলাই তোলা। ছবি : সংগৃহীত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সার-ই-পোল প্রদেশের বলখাব জেলায় তালেবানের সাবেক কমান্ডার মাহদি মুজাহিদের নেতৃত্বাধীন বিচ্ছিন্ন একটি গ্রুপ ও তালেবানের মধ্যকার সংঘর্ষে লোকজন এলাকা ছেড়ে পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন এ তথ্য জানায়।

নিরাপদ স্থানের খোঁজে মানুষজন কয়েকদিন ধরে পাথুরে রাস্তা হেঁটে পাড়ি দিয়েছেন বলেও জানা গেছে। নিরাপত্তাজনিত কারণে জাহরা ছদ্মনাম ব্যবহারকারী ৩৫ বছর বয়সি এক নারী বলেন, ‘আমরা আটকা পড়তে চাইনি। কারণ, আটকা পড়লে মৃত্যুও হতে পারে।’

মাহদি মুজাহিদ এক সময় তালেবানের প্রাদেশিক গোয়েন্দা প্রধান ছিলেন। মধ্য আফগানিস্তানের বামিয়ানে দায়িত্ব পালন করতেন তিনি।

গোষ্ঠীগত পার্থক্য, ধর্মীয় মতাদর্শের বৈপরীত্য ও বলখাব জেলার লোভনীয় কয়লা সম্পদের দখল নিয়ে মূলত বিরোধের সূত্রপাত। শিয়া হাজারা গোষ্ঠীর নেতা মাহদি মুজাহিদ ২০১৯ সালে তালেবানে যোগ দেন। গত বছরের আগস্টে দেশের ক্ষমতা দখলের পর মাহদি মুজাহিদকে বামিয়ানের গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করে তালেবান।

পরে কেন্দ্রীয় তালেবান মাহদি মুজাহিদের এলাকা বলখাবের কয়লা বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মাহদি মুজাহিদ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব অমান্য করতে শুরু করেন। সম্প্রতি তালেবানের সঙ্গে মাহদি মুজাহিদের লোকজনের সরাসরি সংঘর্ষের খবর আসতে থাকে এবং এ কারণে স্থানীয়রা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। উদ্বাস্তু হওয়াদের মধ্যে গর্ভবতী নারীও রয়েছে। অনেকে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়েছেন। মানবেতর জীবনযাপন করছেন গৃহহারা হওয়া কয়েক হাজার মানুষ।

যদিও তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বলখাবে মাহদি মুজাহিদের লোকজন পাহাড়ে পালিয়েছে। সেখানে সংঘর্ষ থেমে গেছে।

কিন্তু মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে এবং স্থানীয়রা চরম আতঙ্কে দিন পার করছেন। রাস্তা ঘাট ভাল না হওয়ায় ঘরহারা মানুষজনের কাছে প্রাথমিক সহযোগিতা পৌঁছানোও দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বিশ্ববাজারে এবং আফগানিস্তানে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়লার চাহিদা বৃদ্ধি পায়।