আমরা ‘জলবায়ু নরকের’ মহাসড়কে রয়েছি : গুতেরেস

Looks like you've blocked notifications!
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। ছবি : সংগৃহীত

বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ’ অথবা ‘সামষ্টিক আত্মহত্যা’র মধ্যে যেকোনও একটিকে বেছে নেওয়ার মতো কঠোর পছন্দের মুখোমুখি হয়েছে মানুষ। সোমবার মিসরে জাতিসংঘের কপ২৭ জলবায়ু সম্মেলনে মানব সভ্যতার উদ্দেশ্যে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।

জাতিসংঘের দু’দিনব্যাপী এই জলবায়ু সম্মেলনে অংশ নিতে লোহিত সাগরের কোল ঘেঁষা মিসরের অবকাশ কেন্দ্র শারম আল-শেখে বিশ্বের শতাধিক দেশের নেতা ও সরকার প্রধানরা উপস্থিত হয়েছেন।

ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার প্রভাবে বিধ্বস্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর ক্ষয়ক্ষতি ও আর্থিকভাবে পিছিয়ে যাওয়া ঠেকাতে এরই মধ্যে কার্বন নির্গমন হ্রাসের আহ্বান এসেছে এই সম্মেলন থেকে।

কপ২৭ জলবায়ু সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় মানুষকে পারস্পরিক সহযোগিতা অথবা ধ্বংসের মধ্যে যেকোনও একটি বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

গ্যাস নির্গমনে সবচেয়ে কম দায়ী দরিদ্র দেশগুলোর সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য শীর্ষ দূষণকারী ধনী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে গুতেরেস বলেছেন, জলবায়ু সংহতি চুক্তি অথবা সামষ্টিক আত্মহত্যা চুক্তির মধ্যে যেকোনও একটি বেছে নিতে হবে।

ক্রমবর্ধমান তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধকল সামলাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ রীতিমতো লড়াই করছে। নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চলতি বছরে বিশ্বে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি, নাইজেরিয়া ও পাকিস্তানে ধ্বংসাত্মক বন্যা থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, আফ্রিকায় খরা এবং তিন মহাদেশজুড়ে নজিরবিহীন তাপপ্রবাহে শত শত কোটি ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

জলবায়ু পরিবর্তনকে পেছনের দহনকারী হিসেবে রেখে দেওয়া যায় না বলে বিশ্ব নেতাদের স্মরণ করে দিয়েছেন অ্যান্তনিও গুতেরেস। তিনি কার্বন নিঃসরণে শীর্ষ ধনী এবং উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে একটি ‘ঐতিহাসিক’ চুক্তি স্বাক্ষরের আহ্বান জানিয়েছেন।

এর মাধ্যমে ধনী দেশগুলোর কার্বন নির্গমনের পরিমাণ দ্বিগুণ হ্রাস এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধিকে উচ্চাভিলাষী প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের চেয়েও বেশি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসে ধরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

বিশ্বের বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, চলতি দশকের শেষ নাগাদ কার্বন দূষণ ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, একই সময়ে পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রাও ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পাবে। গুতেরেস বলেছেন, আমরা ‘জলবায়ু নরকের’ এক মহাসড়কে রয়েছি এবং আমাদের পা এখনও এই নরকমুখী চলন্ত সিঁড়িতে রয়েছে।