ইউক্রেনের অধিকৃত অঞ্চলে ‘ভোট’ চাইতে ঘরে ঘরে যাচ্ছে রুশ সেনারা
রাশিয়ায় যোগ দিতে ইউক্রেনের দখল করা অংশে আয়োজিত ‘গণভোটের’ মতামত সংগ্রহ করতে ঘরে ঘরে যাচ্ছে রাশিয়ান সৈন্যরা। ভোটের অংশ হিসেবে সৈন্যরা মৌখিকভাবে লোকজনের মতামত নিচ্ছে ও ফরম পূরণ করে নিজেদের কাছে রাখছে। খবর বিবিসির।
এদিকে, দক্ষিণ খেরসনে রাশিয়ার সৈন্যরা শহরের কেন্দ্রস্থলে ব্যালট বাক্স নিয়ে দাঁড়িয়ে লোকজনের ভোট সংগ্রহ করছে। রাশিয়ান গণমাধ্যমগুলো জানায় ঘরে ঘরে গিয়ে এই ভোট নেয়া হচ্ছে ‘নিরাপত্তার’ জন্য। রুশ বার্তা সংস্থা তাস জানায় পাঁচ দিনের গণভোটে ২৭ সেপ্টেম্বর বিশেষভাবে সশরীরে লোকজনের ভোট নেওয়া হবে আর অন্য সময়ে এলাকাভিত্তিক ও প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মেলিটোপোল এলাকার একজন নারী বিবিসিকে বলেন, “ভোট নিতে দুজন রাশিয়ান সৈন্য স্থানীয় ‘সহায়তাকারীদের’ সঙ্গে তাদের ফ্লাটে আসে ও একটি ব্যালটে স্বাক্ষর করতে বলে।”
ওই নারী বলেন, “আমার বাবা রাশিয়ায় যোগ দেয়ার প্রশ্নে ব্যালটে ‘না’ ঘরে টিক চিহ্ন দেয়। আমার মা এসময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আর সৈন্যদের কাছে জানতে চান ‘না’ দেওয়ায় কী হতে পারে। উত্তরে তারা জানায় কিছুই হবে না।”
তিনি জানান, তারঁ মা এখন দুশ্চিন্তায় আছেন যে ‘না’ ভোটের জন্য হয়তো তাদের সবাইকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হতে পারে। ওই নারী আরও জানান যে পুরো পরিবারের জন্য দেওয়া হয়েছিল একটিমাত্র ব্যালট। মস্কো যদিও বলছে যে ভোট হবে অবাধ ও সুষ্ঠু, তবে সশস্ত্র সৈন্যদের ভোট সংগ্রহ পুরো বিষয়টিকে বিপরীত প্রমাণ করছে।
অন্যদিকে, আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের আংশিক সৈন্য সমাবেশের ঘোষণা অনুসারে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে নাম অন্তর্ভূক্তির জন্য দেশটির নাগরিকদের বাধ্যতামূলকভাবে যোগ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকার, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী ও সাংবাদিকদের বাদ দিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষমন্ত্রী সের্গেই শোইগু এর আগে জানিয়েছিলেন, ইউক্রেন যুদ্ধে সামরিক বাহিনীর তৎপরতা বাড়াতে অতিরিক্ত তিন লাখ সৈন্য মোতায়েন করা হবে।
তবে গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা দেয়, দেশের আর্থিক ব্যবস্থা সচল রাখতে ও হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিতে কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করতে ওই সব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের রিজার্ভ সৈন্যের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হবে।
এদিকে, সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয় প্রেসিডেন্ট পুতিনের আংশিক সৈন্য সমাবেশের ঘোষণা দেয়ার পরপরই যুদ্ধে যোগ দিতে সেনাবাহিনীর তালিকায় নিজেদের নাম অন্তর্ভূক্তি এড়াতে দলে দলে লোকজন রাশিয়া ছেড়ে পালাচ্ছে। দেশ ছাড়তে সীমান্তের দিকে মানুষের চলাচল বাড়ছে, অন্যদিকে বিমানের টিকিট কাটতেও মানুষের ঢল নেমেছে।