ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চলগুলো রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে গণভোট

Looks like you've blocked notifications!
রাশিয়ার সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ইউক্রেনের লুহানস্ক অঞ্চল। ছবি : রয়টার্স

ইউক্রেনের যেসব অঞ্চল রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ও রাশিয়ার সেনাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে, সেখানে গণভোট আয়োজনের তোড়জোড় চলছে। ইউক্রেনের খেরসন, দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চলকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যেই এ গণভোটের আয়োজন করা হয়েছে। খবর রয়টার্স ও আল-জাজিরার।

খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার নিয়োগ দেওয়া কর্মকর্তারা গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে খেরসনকে যুক্ত করা নিয়ে তাঁরা গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। খেরসনের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর নেতাদের সুরেই কথা বলেছেন রুশ পার্লামেন্টের স্পিকার। তিনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে যদি জনগণ ভোট দেন, তবে তিনি তাতে সমর্থন করবেন।

এদিকে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে যাওয়া বিশ্ব নেতৃবৃন্দের বৈঠকে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করা হয়েছে, কারণ ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের দখলকৃত এলাকায় মস্কোপন্থী নেতারা আগামী দিনে রাশিয়ায় যোগদানের বিষয়ে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

মস্কোপন্থী নেতারা ২৩-২৭ সেপ্টেম্বর লুহানস্ক, দোনেৎস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝিয়া প্রদেশে গণভোটের ঘোষণা করেছে, যা ইউক্রেনের প্রায় ১৫% ভূখণ্ড।

রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস বলেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ‘সামরিক অভিযান’ শুরুর আগেই দোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) নামে দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর মধ্যে ২৩ থেকে ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের পক্ষ থেকে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে একটি গণভোটের আয়োজন করা হচ্ছে। রুশ-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এ গণভোটের আয়োজন করছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একজন বলেছেন, তিনিও মস্কো-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন করছেন। এতে ইউক্রেনের বিশাল অঞ্চল ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথ প্রশস্ত হবে। এতে কিয়েভকে সমর্থনকারী পশ্চিমাদের ওপরেও চাপ বাড়বে।

এদিকে গণভোট আয়োজন নিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের সমন্বিত উদ্যোগ প্রসঙ্গে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই ল্যাভরভ বলেন, ‘রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হতে গণভোটের আয়োজন হবে কি না, এ সিদ্ধান্ত ওই অঞ্চলের লোকজনের। শুরু থেকেই আমরা বলে আসছি, ওই সব এলাকার লোকজনের ভাগ্য তাঁদের নিজেদের নির্ধারণ করতে হবে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সাত মাসে গড়িয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুতিন। তবে মস্কো একে ‘সামরিক অভিযান’ বলে উল্লেখ করে থাকে। গত সাত মাসের যুদ্ধে ইউক্রেনের এক-পঞ্চমাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন রাশিয়ার সেনারা। তবে ইউক্রেনের সেনারা এখন পাল্টাহামলা শুরু করেছেন। দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ইউক্রেনের সেনাদের কাছে কিছু এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছেন রাশিয়ার সেনারা। এ পরিস্থিতিতে পুতিন এখন যুদ্ধের পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন। এর মধ্যেই গত সোমবার দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা রাশিয়ায় যোগদানের জন্য গণভোটের পরিকল্পনায় সম্মতি দেন।