ইউক্রেন যুদ্ধ পোল্যান্ডে ছড়িয়ে পড়ায় নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ন্যাটো

Looks like you've blocked notifications!
পোল্যান্ড সীমান্তে ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত হানার স্থানটিতে অবস্থান করছে পোলিশ সেনাসদস্যরা। ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেনের সীমান্তে পোল্যান্ডের একটি গ্রামে ক্ষেপনাস্ত্র বিস্ফোরণে দুই জন নিহতের ঘটনায় এ সপ্তাহে কেঁপে ওঠেছিল ন্যাটো।

মঙ্গলবারের ওই বিস্ফোরণের পরপরই পোলিশ প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদা জানান, প্রেজেওদো নামের কয়েকশত অধিবাসীর ওই গ্রামে যে ক্ষেপনাস্ত্র আঘাত হেনেছে তা সম্ভবত রাশিয়ার তৈরি। অবশ্য এ বিষয়ে তদন্ত এখনও চলছে।

আন্দ্রেজ দুদার এই বিবৃতির পর নড়েচড়ে বনে পুরো বিশ্ব এবং ন্যাটো নেতারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক জোটের (ন্যাটো) সদস্যরাষ্ট্র পোল্যান্ডের প্রতি ইঞ্চি ভূখণ্ড রক্ষার জন্য তাদের ইচ্ছাকে প্রকাশ করতে থাকেন।

সামরিক বিশ্লেষকরা এ সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে ওঠেন ন্যাটোর আর্টিকেল ৪ ও আর্টিকেল ৫ এর বিষয়ে। আর্টিকেল ৪ এ বলা হয়েছে ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর নিজেদের মধ্যে আলোচনার বিষয়ে যখন একটি সদস্য দেশ মনে করবে যে সে হুমকির মুখে পড়েছে। আর আর্টিকেল ৫ এ বলা হয়েছে ওই ধরনের হুমকির কারণে পুরো জোটের বিরুদ্ধে সহিংসতার জন্য পাল্টা আক্রমণের বিষয়ে যা জোটের সদস্য দেশকে রক্ষার জন্য নেয়া সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আসবে।

অন্যদিকে, ওই দিন রাশিয়া ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে একর পর এক ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চালায়।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পোল্যান্ডের বিস্ফোরণকে যুদ্ধের পরিধি বাড়াতে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করেন ও বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই এর বিরুদ্ধে কিছু করতে হবে।’

তবে ন্যাটো ও পশ্চিমা জাতিগুলো বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শান্ত থেকে ক্ষেপনাস্ত্র ছোড়াকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে বর্ণনা করে এবং জানায় যে হতে পারে এই বিস্ফোরণ ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছোড়া ক্ষেপনাস্ত্রের আঘাতে হয়েছে। তবে তারা এটাও বলে এই ঘটনার জন্য রাশিয়াকেই দায় নিতে হবে কেননা তারাই আগ্রাসি এবং যুদ্ধের উৎপত্তির কারণ।

ন্যাটো মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ পুরো বিষয়টি নিয়ে ছিলেন বেশ সাবধানী। তিনি এই ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেননি এবং অপেক্ষা করছিলেন পোলিশ গোয়েন্দারা কী তথ্য দেয় তার ওপর।

বিস্ফোরণের একদিন পর পোলিশ প্রেসিডেন্ট দুদা এ বিষয়ে তার পশ্চিমা মিত্রদর সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন যে বিস্ফোরণের ওই ঘটনা ঘটেছে সম্ভবত ইউক্রেনের একটি দুর্ঘটনা হিসেবে আর এরজন্য ন্যাটোর আর্টিকেল আহ্বান করার কোনো প্রয়োজন নেই।

অন্যদিকে, স্টলটেনবার্গের কথায় প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায় ওই ক্ষেপনাস্ত্রটি পোল্যান্ডের সীমান্তে পড়ে নিজেদের ভূখণ্ড রক্ষায় ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে ছোড়ার কারণে যা রাশিয়ার ক্রুজ ক্ষেপনাস্ত্র আক্রমণ প্রতিহতের জন্য ব্যবহার হয়। তিনি বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, এটা ইউক্রেনের ভুল নয়, পুরো ঘটনার জন্য দায়ী রাশিয়া।’