ইউরোপে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে : ডব্লিউএইচও

Looks like you've blocked notifications!
ইউরোপে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। ছবি : সংগৃহীত

ইউরোপে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দৈনিক মৃত্যুর হার দ্রুতগতিতে বাড়ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)জানিয়েছে, ইউরোপে গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ হারে করোনায় দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মুখপাত্র ড. মার্গারেট হ্যারিস বলেছেন, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্স, স্পেন, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস ও রাশিয়ায় করোনা সংক্রমণের হার বেড়েছে এক-তৃতীয়াংশ।

ড. হ্যারিস বলেন, ‘ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে (করোনায়) আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার আশঙ্কাজনকভাবে বাড়তে দেখছি আমরা।’

ড. হ্যারিস আরো বলেন, গত সপ্তাহের তুলনায় করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে এক-তৃতীয়াংশ, আর করোনায় দৈনিক মৃতের হার বেড়েছে ‘প্রায় ৪০ শতাংশ’।

ড. হ্যারিস সতর্ক করে বলেন, ‘অনেক দেশেই হাসপাতালে রোগী ধারণক্ষমতার ব্যবস্থাপনায় উন্নতি হয়েছে। কিন্তু এরপরও কয়েকটি দেশের হাসপাতালগুলো দ্রুত রোগীতে ভরে যাচ্ছে।’

‘উদ্বেগের বিষয় হলো... হাসপাতালগুলোর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র খুব অসুস্থ রোগীতে ভরে যেতে শুরু করেছে।’

রাশিয়ার গতকাল মঙ্গলবার একদিনে করোনায় ৩২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৯ জনে।

করোনায় মৃতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে ইতালিতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ২২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল মঙ্গলবার অস্ট্রিয়াতে করোনায় মোট মৃতের সংখ্যা এক হাজার ছাড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও ব্রাজিলের পর রাশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে। রাশিয়ায় গতকাল মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে ১৬ হাজার ৫৫০ জন। এমন পরিস্থিতে সব ধরনের গণজমায়েত স্থলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা বেড়েছে ইতালিতেও। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনা পরীক্ষার হার বাড়ায় বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যাও। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছে প্রায় ২২ হাজার জন।

ইউরোপে লকডাউনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

করোনায় সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ লেগেছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে৷ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক শহরকে লকডাউনের আওতায় নিতে হচ্ছে৷কিন্তু এর মধ্যেই অনেকেই স্বাস্থ্যঝুঁকিকে গুরুত্ব না দিয়ে নেমে পড়ছেন লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভে৷

যুক্তরাজ্যে করোনা পরিস্থিতি আবারও খারাপের দিকে যাচ্ছে৷এ পর্যন্ত দেশটিতে আট লাখ ৯৪ হাজারেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত এবং ৪৫ হাজারের করোনায় মৃত্যু হলেও, গত দু মাসে সংক্রমণ বেশ কমেছিল৷ কিন্তু নতুন করে দিনে শতাধিক মৃত্যু আর প্রায় ২১ হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছে দেশটিতে৷এমন পরিস্থিতির মধ্যেই লন্ডনে হয়েছে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ৷ দৈনিক গড়ে ২১ হাজার মানুষের সংক্রমিত হওয়ার বিষয়টিকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছেন না বিক্ষোভকারীরা৷ তাঁরা মনে করেন, করোনা সংক্রমণ আপনাআপনিই সেরে যাবে৷ তাই লন্ডনে লকডাউনবিরোধী মিছিলে এক বিক্ষোভকারীর প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করো না, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই তা করবে৷’

ইতালিতেও হয়েছে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ৷ অথচ ইউরোপের প্রথম করোনা এপিসেন্টার বা কেন্দ্র ছিল ইতালি৷ দেশটিতে প্রায় পাঁচ লাখ ৪৩ হাজার মানুষের সংক্রমণ এবং ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ করোনাভাইরাস৷ অথচ করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের শুরুতে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানার নির্দেশ আসতেই রোম নগরীতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভকারীরা৷ ইতালির আরেক শহর নেপলসেও হয়েছে লকডাউনবিরোধী বিক্ষোভ৷ করোনার সংক্রমণ আবার আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করলেও নেপলসের দোকানমালিকেরা লকডাউন মানতে নারাজ। তাই প্রতিবাদে নেমেছেন রাস্তায়৷