ইরানের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি মন্ত্রীর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
ইরানের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ অজারি জাহরোমির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ইরানে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
মার্কিন অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিদেশি সম্পদ নিয়ন্ত্রণ বিভাগ গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, ইরানব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার কারণে দেশটির আইসিটি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের এ মন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র সফরে যেতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রে তাঁর কোনো সম্পদ থাকলে তা জব্দ করা হবে। ইরানি সংবাদমাধ্যম পার্স টুডে এ খবর জানিয়েছে।
এর আগেও একাধিক ইরানি কর্মকর্তার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন।
ইরানের পার্লামেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা ও পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির সদস্য আবুল ফজল হোসেইন বেগি গত বুধবার বলেছিলেন, ‘একদল দুর্বৃত্ত ইন্টারনেট সংযোগের অপব্যবহার করে তাদের নাশকতামূলক তৎপরতার স্থান ও সময় সম্পর্কে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছিল বলে ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দেওয়া হয়েছে।’
এ ছাড়া আবুল ফজল হোসেইন বেগি জানান, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং বিষয়টি আইসিটিমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
ইরানে গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে তেলের বর্ধিত মূল্য কার্যকর করা হয়। হঠাৎ করেই পেট্রলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিক্ষোভ শুরু করে সাধারণ মানুষ। সরকারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে রাজধানী তেহরানসহ দেশের বিভিন্ন শহরের মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এরই মধ্যে সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে, যাতে অংশ নিচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এ বিক্ষোভে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
ইরান সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার পেট্রল ১৫ হাজার রিয়াল দরে প্রতি মাসে মোট ৬০ লিটার পেট্রল কিনতে পারবে মোটরযান মালিকরা। এর আগে এক ব্যক্তি প্রতি লিটার ১০ হাজার রিয়াল দরে মোট ২৫০ লিটার পেট্রল কিনতে পারত।
কর্তৃপক্ষ বলছে, পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দিয়ে সরকার যে পরিমাণ অর্থ আয় করবে, তা দিয়ে নিম্ন আয়ের দরিদ্র পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি জানিয়েছেন, ৭৫ শতাংশ ইরানি বর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে চাপের মুখে রয়েছে। পেট্রলে ভর্তুকি বাদ দেওয়ায় সরকার যে আয় করবে, তা ইরানের কোষাগারে জমা না রেখে জনগণকে সহায়তা করা হবে।