উত্তর কোরিয়ায় এক দিনে ‘জ্বর’ শনাক্ত দেড় লাখের বেশি মানুষের

Looks like you've blocked notifications!
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন। ছবি : সংগৃহীত

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলছেন—কোভিড-১৯-এর বিস্তার দেশটিকে ‘চরম অস্থিরতা’র মধ্যে ফেলেছে। তিনি কোভিড মহামারি কাটিয়ে উঠতে কোভিডের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক লড়াইয়ের আহ্বান জানিয়েছেন। এর মধ্যেই দেশটিজুড়ে ‘জ্বরে’ আক্রান্তদের মধ্য থেকে নতুন করে আরও ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।

বিশ্বজুড়ে কোভিড মহামারি শুরু হওয়ার দুই বছরের বেশি সময় ধরে উত্তর কোরিয়া সে দেশে নভেল করোনাভাইরাসের কোনো সংক্রমণ নেই বলে দাবি করে আসছিল। চলতি সপ্তাহে দেশটি প্রথম বারের মতো করোনার প্রাদুর্ভাবের কথা স্বীকার করে। যদিও দেশটিতে ব্যাপক কোভিড পরীক্ষা কিংবা চিকিত্সার ব্যবস্থা চলছে বলে কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন—উত্তর কোরিয়ার করোনা পরীক্ষার সক্ষমতা সীমিত, যা কোভিড টিকার ব্যবস্থা না করা দেশটিতে হাজার হাজার মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ ছাড়া সরকারিভাবে করোনায় আক্রান্তের প্রকাশিত সংখ্যা বাস্তবিক সংক্রমণের চেয়ে অনেক কম বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, দেশটির ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টি সম্প্রতি কোভিড সংক্রমণ ইস্যুতে জরুরি বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকে কর্তাব্যক্তিদের জানানো হয়—দেশটিজুড়ে এপ্রিলের শেষ দিকে অজ্ঞাত ধরনের জ্বর শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় দুই লাখ ৮০ হাজার ৮১০ জনের চিকিৎসা করা হয়েছে এবং জ্বরে ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।

কেসিএনএ জানিয়েছে, ওই বৈঠকে কিম বলেছেন, ‘উত্তর কোরিয়া প্রতিষ্ঠার পর থেকে আমাদের দেশে এমন মারাত্মক মহামারির বিস্তার বড় ধরনের অশান্তিজনক।’

‘তবে, আমরা যদি মহামারি মোকাবিলা নীতি বাস্তবায়নে মনোযোগ না হারাই এবং দলীয় ও জনগণের সুনির্দিষ্ট ঐক্যের ভিত্তিতে শক্তিশালী সাংগঠনিক শক্তি ও নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখি এবং মহামারির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জোরদার করি, তাহলে আমরা এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব’, যোগ করেন কিম।

কেসিএনএ’র খবরে বলা হয়েছে—ওই বৈঠকে মহামারি নিয়ন্ত্রণবিষয়ক কর্মকর্তাদের পেশ করা প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, চিকিত্সা পদ্ধতির বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞানের অভাবে অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ প্রয়োগ ও অবহেলার কারণে রোগীদের মৃত্যু হয়েছে।’

এদিকে, জ্বরাক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে যাদের মৃত্যু হয়েছে, তারা করোনায় মারা গেছে কি না, তা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমটি জানায়নি। এর আগে কেসিএনএ গতকাল শুক্রবার জানিয়েছিল—করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত হয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।

উত্তর কোরিয়ায় গতকাল শুক্রবার নতুন করে এক লাখ ৭৪ হাজার ৪৪০ জন নতুন করে জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। এপ্রিলের শেষ থেকে গতকাল পর্যন্ত মোট পাঁচ লাখ ২৪ হাজার ৪৪০ জনের মধ্যে জ্বরের লক্ষণ দেখা গেছে বলে কেসিএনএ জানিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় দুই লাখ ৪৩ হাজার ৬৩০ জনকে চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে। তবে, কত জনের কোভিড পরীক্ষা করা হয়েছে বা কোভিডে আক্রান্তের মোট সংখ্যা কত, তা জানায়নি কেসিএনএ।