ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্টের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় কোম্পানিগুলোর দৌড়ঝাঁপ
নভেল করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়্যান্ট ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশগুলো থেকে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশ। এমন পরিস্থিতিতে ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যস্ত রয়েছে তাদের টিকা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে কাজ করবে কি না, তা পরীক্ষায়। অস্ট্রেলিয়ান ফিন্যান্সিয়াল রিভিউ’র প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে বি.১.১.৫২৯ ভ্যারিয়্যান্ট সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক সতর্কবার্তা দেয়। ভ্যারিয়্যান্টটি এখন ‘ওমিক্রন’ নামে পরিচিত। করোনার এই ভ্যারিয়্যান্টের মিউটেশন বা রূপান্তরের ক্ষমতা ‘উদ্বেগজনক’ হওয়ায় এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক শোরগোল তৈরি হয়েছে।
এরই মধ্যে কোভিড টিকা প্রস্তুতকারক মডার্না জানিয়েছে, তাদের বিশেষজ্ঞ দল কয়েকদিন ধরে ওমিক্রন নিয়ে ‘অবিরাম’ কাজ করে যাচ্ছে।
অন্যদিকে, আরেক ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেকের গবেষকেরা ওমিক্রনের আদলে একটি স্ট্রেইন বা ভ্যারিয়্যান্ট তৈরি করেছেন। কৃত্রিমভাবে তৈরি ভ্যারিয়্যান্টটি বিদ্যমান কোভিড টিকাগুলোর কার্যকারিতা পরীক্ষায় ব্যবহার করছেন তাঁরা। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ওমিক্রনের ওপর টিকার প্রভাবে কোনো হেরফের হয় কি না, সেটিই গবেষকেরা যাচাই করছেন।
জনসন অ্যান্ড জনসন বলছে—তারা এরই মধ্যে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাদের টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা শুরু করেছে।
এ ছাড়া ওমিক্রন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
অন্যদিকে, অ্যাস্ট্রাজেনেকা জানিয়েছে—তারা এরই মধ্যে ওমিক্রনের উপস্থিতি শনাক্ত হওয়া বতসোয়ানা ও এসওয়াতিনিতে গবেষণা চালাচ্ছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ওমিক্রন প্রতিরোধে কতটা কার্যকর তা পরীক্ষা করছেন গবেষকেরা।
ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষায় টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচিত একটি পদ্ধতি অবলম্বন করছে।
টিকা প্রস্তুতকারীরা এর আগে আলফা, বিটা ও ডেলটা ভ্যারিয়্যান্ট শনাক্ত হওয়ার পর একই ধরনের ল্যাব পরীক্ষা চালিয়েছিল।
করোনার নতুন ভেরিয়্যান্ট যে আসতে পারে, তা আগেই ধারণা করেছিল টিকা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। এবং সে অনুযায়ী নতুন কোনো ভ্যারিয়্যান্ট এলে পরীক্ষার জন্য আগে থেকেই তাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের প্রস্তুতি ছিল।
শিগগিরই বেটা ভ্যারিয়্যান্টের ক্ষেত্রে নিজেদের রূপান্তরিত টিকা বিষয়ে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করতে যাচ্ছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। অন্যদিকে, আলফা এবং ডেল্টা ভ্যারিয়্যান্টের জন্য বিশেষভাবে তৈরি টিকার ট্রায়াল চালাচ্ছে ফাইজার-বায়োএনটেক।
কিন্তু, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট যদি সত্যিই বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে ভাইরাসবিরোধী ওষুধের চাহিদা যে হারে বাড়বে, কোম্পানিগুলো সে অনুযায়ী টিকা উৎপাদন বাড়ায়নি।
এ বছরের শেষ নাগাদ মার্ক এক কোটি কোর্স ওষুধ উৎপাদন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। আর, ফাইজার-বায়োএনটেক এ বছরের মধ্যে মাত্র এক লাখ ৮০ হাজার কোর্স ওষুধ সরবরাহ করতে পারবে বলে জানিয়েছে। কোম্পানিগুলো একে অপরের সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় করছে। তবুও ওষুধ সরবরাহের ক্ষেত্রে তাদের সময়ের প্রয়োজন হবে।