কানাডায় ৫৫ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া স্থগিত
৫৫ বছরের কম বয়সীদের জন্য অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছে কানাডা। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও সংবাদ সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) বরাত দিয়ে সান ফ্রান্সিসকো ক্রনিকল এ কথা জানিয়েছে।
টিকা নেওয়ার পর সম্ভাব্য রক্ত জমাট বাঁধার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় কানাডার ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশন গতকাল সোমবার দেশটির প্রদেশগুলোতে চলমান টিকাদান কার্যক্রমে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা না দেওয়ার পরামর্শ দেয়।
সোমবার কুইবেক, ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, আলবার্টা, সাস্কাচেওয়ান, ম্যানিটোবা, অন্টারিও এবং নিউফাউন্ডারল্যান্ড ও ল্যাব্রাডর প্রদেশ কর্তৃপক্ষ গতকাল থেকে ৫৫ বছরের কম বয়সীদের এই টিকা দেওয়া স্থগিত করে। তবে কানাডায় অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা দেওয়া কারও শরীরে এখনও রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দেখা যায়নি।
কানাডার সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ অন্টারিওতে আগে থেকেই ৬০ বছর বা তার বেশি বয়সীদের এই টিকা দেওয়া হচ্ছে। সেখানকার ৬৩ বছর বয়সী মার্ক মেন্ডেলসন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, দুই সপ্তাহ আগে প্রথম ডোজ নিয়েছেন। কিছুদিন পর দ্বিতীয় ডোজ নেবেন তিনি। হৃদযন্ত্রের অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল তাঁর।
ন্যাশনাল অ্যাডভাইজরি কমিটি অন ইমিউনাইজেশনের ভাইস চেয়ার ড. শেল্লে ডিকস বলেন, ‘৫৫ বছরের কম বয়সীদের বেলায় অ্যাস্ট্রজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা দিয়ে উপকার পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা পর্যায়ে উল্লেখযোগ্য অনিশ্চয়তা রয়েছে। আগে মনে করা হচ্ছিল দশ লাখে একজনের রক্ত জমাট বাঁধার আশঙ্কা রয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, লাখে একজনের এমন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইউরোপ থেকে পাওয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
ইউরোপে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা দেখা দেওয়া ব্যক্তিদের অধিকাংশ ৫৫ বছরের কম বয়সী নারী এবং এই সমস্যা দেখা দেওয়া লোকজনের ৪০ শতাংশেরই মৃত্যু হচ্ছে বলে জানান ড. শেল্লে ডিকস।
কিছুদিন আগে একই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস ও স্পেনসহ ইউরোপের ১৩টি দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যবহার স্থগিত করেছিল। পরে ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সির (ইএমএ) আশ্বাসে তারা আবার এর ব্যবহার শুরু করেছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (ডব্লিউএইচও) যুক্তরাজ্যের কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকাটিকে পুনরায় নিরাপদ ঘোষণা করে।
পৃথিবীর ৭০টিরও বেশি দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি কোভিড-১৯ টিকার ব্যবহার চলছে। এ ছাড়া দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিতরণের জন্য জাতিসংঘের পৃষ্ঠপোষকতায় চলমান ‘কোভ্যাক্স’ প্রকল্পেও টিকা সরবরাহ করছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।