ক্ষমতা ছাড়তে রাজি, তবে বিক্ষোভের মুখে নয় : বেলারুশ প্রেসিডেন্ট

Looks like you've blocked notifications!
বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। ছবি : সংগৃহীত

গণভোটের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধন করে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজি আছি, কিন্তু বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে ক্ষমতা ছাড়ব না।’ বেলারুশের সরকারি বার্তা সংস্থা বেলটার বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা আজ মঙ্গলবার এ খবর জানিয়েছে।

এদিকে লুকাশেঙ্কো জানিয়েছেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য সংবিধানের প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। তবে তিনি নতুন করে কোনো নির্বাচন চান না। লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘৯ আগস্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর আমি হত্যার শিকার না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।’

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, লুকাশেঙ্কো সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছেন। তবে এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।

৯ আগস্ট বেলারুশে বিতর্কিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলে প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোকে আবারও বিজয়ী ঘোষণা করার পর দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। দেশটির রাজধানী মিনস্কে লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন ক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। এর মধ্যেই পুলিশি সহিংসতায় রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে ‘মার্চ ফর ফ্রিডম’ নামে ওই বিক্ষোভ চরমে পৌঁছায়। রোববার মিনস্কে বিরোধীদের ডাকা বিক্ষোভে এত মানুষ জড়ো হয়, যা স্বাধীন বেলারুশের ইতিহাসে আগে কখনো দেখা যায়নি।

অন্যদিকে, ভোট কারচুপির অজুহাতে বাইরে থেকে সামরিক হামলার হুমকি আসতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন বেলারুশ প্রেসিডেন্ট। প্রতিবেশী পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটোর সামরিক মহড়া নিয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করছেন বলে জানিয়েছিলেন। এরপর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেলারুশে সামরিক নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর থেকেই বিক্ষোভ নতুন মাত্রা পায়। এও শোনা যায়, গত সপ্তাহে পুতিনের সঙ্গে দুবার কথা বলেছেন লুকাশেঙ্কো।

ইউক্রেনে মস্কোর ক্রিমিয়া অভিযানের পরে বাল্টিক দেশগুলোতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে চারটি সামরিক দল পাঠিয়েছে ন্যাটো। এর ফলে লুকাশেঙ্কোর আশঙ্কা, বেলারুশেও ন্যাটো বাহিনী তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে পারে।

লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন সভেতলানা তিখানোভস্কায়া নামের এক তরুণী। কিন্তু দেখা গেছে, তিখানোভস্কায়া পেয়েছেন ১০ দশমিক ১২ শতাংশ ভোট। অন্যদিকে, লুকাশেঙ্কো পেয়েছেন ৮০ দশমিক ১ শতাংশ ভোট। এতে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তিখানোভস্কায়া বলছেন, সুষ্ঠুভাবে ভোট হলে তিনি জয়লাভ করতেন। অন্যদিকে, রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ লুকাশেঙ্কো ১৯৯৪ সাল থেকে ক্ষমতায় আছেন।

এদিকে, সরকারের বিরোধিতা করায় বেলারুশে অন্তত সাত হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া অনেকেই পুলিশি নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।