গভীর সঙ্কটে চীনের অর্থনীতি

Looks like you've blocked notifications!
গ্রেট হলে অভ্যর্থনায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ছবি : সংগৃহীত

এক দশক আগে শি জিনপিং যখন চীনের ক্ষমতায় আসেন তখন দেশটি সবে জাপানকে অতিক্রম করে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।

এর পর থেকে গতি পায় চীনের অর্থনীতি। ২০১২ সালের পর থেকে ৬.৭ শতাংশ হারে জিডিপি প্রবৃদ্ধির কারণে বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বাড়তে থাকা অর্থনীতির দেশে পরিণত হয় চীন। বিশ্বব্যাংকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালে দেশটির জিডিপি ১৮ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে যা বিশ্ব অর্থনীতির ১৮.৪ শতাংশ।

চীনের ক্রমাগত প্রযুক্তভিত্তিক অগ্রসরতার কারণে দেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলোর জন্য এক প্রকার হুমকি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ফাইভ-জি প্রযুক্তি থেকে শুরু করে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স খাতে চীন তার প্রতিপক্ষ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে নেতৃত্বের আসন থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দিতে শুরু করে।

সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনীতিবিদরা ভবিষ্যত বাণী দিয়েছিলেন যে চীন ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। তবে বর্তমানে এই অবস্থা ততোটা প্রতিশ্রুতিশীল নয়।

আগামী দশকের জন্য ক্ষমতায় আসীন হতে যাওয়া শি জিনপিংয়ের সামনে রয়েছে বেশ কিছুর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও অতৃপ্ত মধ্যবিত্ত শ্রেণি। সামাজিক অসন্তোষের পাশাপাশি উদ্ভাবন ও উৎপাদনশীলতায় ধীরগতির মখোমুখি হওয়া চীনের অর্থনীতিকে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে পারছেন না শি জিনপিং।

এ বিষয়ে অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটির গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট স্কুলের চায়না ইনিশিয়েটিভ পরিচালক দাগ গুথ্রি বলেন, ‘গত ৩০ বছর চীন যে পথে ছিল সে কারণে দেশটির জনগণ অনেক আশা করেছিল। তবে এই মুহূর্তে চীন গভীর সঙ্কটে রয়েছে।’

তবে চীনের অর্থনৈতিক উত্থানে বিশেষ করে ব্যক্তিগত খাতের উন্নয়নে ও উদ্যোক্তাদের সহায়তায় নজর দিতে শি জিনপিংয়ের উদ্যোগ ছিল প্রশংসনীয় যা আগের অনেক নেতাই করতে পারেননি। তবে শির সাম্প্রতিক কিছু নীতি দেশটির মাথা ব্যথা হয়ে দেখা দিয়েছে।

২০২০ সালের পর চীনে ব্যক্তি মালিকানা খাতে ব্যাপক কঠোর নীতি এবং শূন্য-কোভিড নীতির কারণে প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে ও চাকরির বাজারে। আর এ কারণেই শি জিনপিং দেশের বর্ধনশীল অর্থনীতির জন্য মন্দা ডেকে এনেছেন বলে মনে করছেন অনেকেই। গত দুই বছরে চীনের প্রযুক্তি শিল্পে বিক্রি কমে গেছে এর প্রধান কারণ জায়ান্ট কোম্পানি আলিবাবা ও টেনসেন্ট-এর এক ট্রিলিয়নেরও বেশি মার্কিন ডলারের বাজার মূল্য বাতিল করার সিদ্ধান্ত। এর ফলে প্রায় দশ হাজার মানুষের চাকরি চলে যায় যা দেশটিতে বাড়তে থাকা যুবা বেকারত্বের অন্যতম কারণ।