গুলিতে আহত হওয়ার পর প্রথম জনসভা করলেন ইমরান খান

Looks like you've blocked notifications!
বুলেট প্রুফ কাঁচের আড়াল থেকে জনসমাবেশে বক্তৃতা করছেন ইমরান খান। ছবি : সংগৃহীত

তিন সপ্তাহ আগে বন্দুকধারীর গুলিতে আহত হওয়ার পর পাকিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তাঁর সমর্থকদের উদ্দেশে এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতা করেছেন। রাউয়ালপিন্ডি শহরে আয়োজিত এই জনসভায় তাঁর দলের (তেহরিক-ই-ইনসাফ) নেতাকর্মী ও সমর্থকরা হাজির হয় পতাকা ও প্রতীক নিয়ে। সাবেক এই ক্রিকেট তারকা জনতার উদ্দেশে মৃত্যুর ভয়ে ভীত না হয়ে বেঁচে থাকার আহ্বান জানান। খবর বিবিসির।  

ইমরান খানের ওপর চালানো ওই হামলায় একজন নিহত ও আহত হয় বেশ কয়েকজন। রাজনৈতিক প্রচারণা চালানোর সময় এই হামলা হয়। হামলায় ইমরানের ডান পায়ে গুলি লাগে এবং তাঁকে যেতে হয় অপারেশন টেবিলে। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী ওয়াজিরাবাদে ওই হামলায় ষড়যন্ত্রের জন্য ক্ষমতাসীন সরকারকে দায়ী করে আসছেন।

তবে কর্তৃপক্ষ এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ও প্রমাণ হিসেবে এক ব্যক্তির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিডিও প্রকাশ করে যাকে এই হামলার জন্য একমাত্র সন্দেহভাজন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।

এদিকে, রাউয়ালপিন্ডিতে জনসভায় যখন ইমরান খান হাজির হন তখন উপস্থিত জনতা উল্লাসে ফেটে পড়ে। এক নারী বিবিসিকে জানান, পাকিস্তানের জনগণের জন্য ইমরানের জনসভায় এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসছি একজন নেতার কারণে যিনি আমাদের সমর্থন করছেন।’

জনতার ভীড় থেকে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যার কন্ঠস্বর সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোচ্চার। তিনি এখানে আগামী দিনের জন্য, তিনি আমাদের একটি লক্ষ্য দিয়েছেন।’

কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সমাবেশস্থলের পরিবেশ ছিল আনন্দে পরিপূর্ণ। জনতা সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নামে শ্লোগান দিচ্ছিল আর লাউডস্পিকারে বাজছিল জনপ্রিয় পাকিস্তানি গান।

ইমরান খান তাঁর বক্তৃতায় অভিযোগ করেন ‘তিনজন অপরাধী’ তার জীবন নাশে আরেকটি ঘটনা ঘটাতে ওঠেপড়ে লেগেছে। তবে তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘ভয় পুরো জাতিকে দাসে পরিণত করেছে।’ ইমরান খান তাঁর বক্তৃতায় ক্ষমতায় থাকতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তার ব্যর্থতা স্বীকার করে নেন। তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাশালীদের আইনের আওতায় আনতে আমি ব্যর্থ হয়েছিলাম।’

এই জনসভা ছিল ইমরান খানের ‘লং মার্চে’র চূড়ান্ত রূপ। আগাম নির্বাচনের দাবিতে তিনি এই কর্মসূচি দেন। এর আগে সহিংসতার আশঙ্কায় কর্তৃপক্ষ রাস্তা আটকে দেয় এবং ইমরান খানকে জনসভা স্থগিত করার আহ্বান জানায়।

পাকিস্তানের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার পর এ বছরের শুরুর দিকে সাবেক এই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকাকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাকে সরকারি কর্মকাণ্ডে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতায় থাকতে রোলেক্স ঘড়ি, আংটি এবং কাফ লিংকসহ বিদেশ থেকে পাওয়া কিছু উপহার বিক্রির বিষয়ে সঠিক তথ্য না দেওয়ায় তাকে দোষি সাব্যস্ত করা হয়।

তবে এই অভিযোগকে ইমরান খান রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন এবং তিনি কোনো ভুল করেননি বলে জানিয়েছেন।