জনবিক্ষোভের মধ্যেই শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি

Looks like you've blocked notifications!
শুক্রবার কলম্বোয় শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত বাসভবনের বাইরে পোড়ানো গাড়ি। ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায় চরম অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে দেশজুড়ে চলমান জনরোষ, প্রেসিডেন্টের বাসার বাইরে সহিংসতা ও বিক্ষোভের মধ্যেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। এক সরকারি গেজেটে গতকাল শুক্রবার রাতে জরুরি অবস্থা জারির কথা জানানো হয়। খবর বিবিসির।

কলম্বোয় গত বৃহস্পতিবার শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের ব্যক্তিগত বাসভবনের কাছে বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন এবং একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। ওই ঘটনার পরে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করে ওয়ারেন্ট ছাড়াই সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বলেছেন—শৃঙ্খলা, জননিরাপত্তা এবং নিত্যপণ্যর সরবরাহ ও জরুরি পরিষেবা চালু রাখতে জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রিজার্ভ সংকটের কারণে কয়েক মাস ধরে শ্রীলঙ্কায় পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে লাগামহীনভাবে বাড়ছে নিত্যপণ্যের মূল্য। এর সঙ্গে রয়েছে ব্যাপক জ্বালানি সংকট। চুলা জ্বালানোর কেরোসিন নিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এ মুহূর্তে সবচেয়ে কঠিন অর্থনৈতিক সংকটের মোকাবিলা করতে হচ্ছে ভারত মহাসাগরের দ্বীপ দেশটিকে।

এ বছর কলম্বোকে প্রায় ৬৯০ কোটি ডলারের ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ তাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৩০ কোটি ডলারের মতো।

দুই কোটি ২০ লাখ মানুষের দেশটির মানুষকে এখন প্রতিদিন ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হচ্ছে, কারণ জ্বালানি তেল আমদানির মত যথেষ্ট বিদেশি মুদ্রা দেশটির সরকারের হাতে নেই।

দেউলিয়া হতে বসা শ্রীলঙ্কা সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে। আইএমএফের একজন মুখপাত্র গত বৃহস্পতিবার বলেছেন, এ বিষয়ে তাঁরা শিগগিরই কলম্বোর সঙ্গে আলোচনায় বসবেন।

ক্রুড অয়েল বা অপরিশোধিত তেলের মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ায় গত মাসে শ্রীলঙ্কা তাদের একমাত্র তেল শোধনাগারটি বন্ধ করে দেয়। ডিজেল সংকট যত বাড়বে বিদ্যুতের লোডশেডিংও তত বাড়তে থাকবে।

বিদ্যুৎ না পাওয়ায় দেশটির প্রধান স্টক মার্কেটে লেনদেনের সময় কমিয়ে এনেও কাজ হচ্ছে না। বিদ্যুৎ বাঁচাতে সড়কবাতিও নিভিয়ে রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কার বিদ্যুৎমন্ত্রী।