থাইল্যান্ডে গণজমায়েত নিষিদ্ধ, জরুরি অবস্থা জারি

Looks like you've blocked notifications!
থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। ছবি : সংগৃহীত

থাইল্যান্ডে সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যে গণজমায়েত বা সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচা। এ ছাড়া গণতন্ত্রপন্থিদের তিন শীর্ষ নেতাসহ আরো কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গতকাল বুধবার উত্তাল হয়ে ওঠে থাইল্যান্ড। রাজধানী ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান-ওচার পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নামেন হাজারো বিক্ষোভকারী। একই সঙ্গে দাবি তোলেন বিদেশভ্রমণ শেষে দেশে ফেরা রাজা মহা ভাজিরালংকর্নের ক্ষমতা খর্ব করার।

এদিন রাজা মহা ভাজিরালংকর্ন দম্পতি বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গেলে সেখানেও অবস্থান নেয় বিক্ষোভকারীরা। যদিও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।

বলা হচ্ছে, এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছে গণতন্ত্রপন্থি শিক্ষার্থীরা। গত জুলাই মাস থেকে এ বিক্ষোভের শুরু। এর আগে রাজধানীতে গত শনিবারও বিক্ষোভ হয়। তাতে যোগ দিয়েছিল অন্তত ১৮ হাজার মানুষ।

কিন্তু গণতন্ত্রপন্থিদের আন্দোলন ও বিক্ষোভ আমলে নিতে চান না থাইল্যান্ডের রাজা। এমনকি সেনা-সমর্থিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুথ চান ওচাও চান না কোনো উত্তাপ ছড়াক। তাই বিক্ষোভ ঠেকাতে আজ বৃহস্পতিবার সকালেই জরুরি অবস্থা জারির সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

ব্যাংকক পুলিশের মুখপাত্র কিশানা পাথানাচারন বলেন, ‘ব্যাংককে অনেক লোকজনকে জড়ো করে, প্ররোচিত করে বেআইনিভাবে বিশাল জনসমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, আইন অনুযায়ী রাজতন্ত্রের সমালোচনা করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।  আমরা ২০ জনের বেশি বিক্ষোভকারীকে আটক করেছি।’

থাইল্যান্ডে জরুরি অবস্থা চলাকালে নিষিদ্ধ করা হয়েছে গণজমায়েত। পাঁচজনের বেশি সড়কে একত্র না হতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনো খবর প্রকাশ না করতে গণমাধ্যমগুলোকে বলা হয়েছে।

কেন বিক্ষোভ

থাইল্যান্ডে ছাত্রদের বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে; ফিউচার ফরওয়ার্ড পার্টির কার্যক্রম বন্ধ করতে আদালতের রায়ের পর। ওই বিক্ষোভ অবশ্য স্তিমিত হয়ে যায়। পরে জুন মাস থেকে তা আবার শুরু হয়। গত জুনে কম্বোডিয়ায় নির্বাসিত গণতন্ত্রপন্থি এক নেতা উধাও হয়ে যান। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর পেছনে থাই সরকার ও পুলিশের হাত আছে; তারাই ওই নেতাকে অপহরণ করেছে। তবে সরকার শিক্ষার্থীদের এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ অব্যাহত রাখে। সপ্তাহান্তের বিক্ষোভে হাজার হাজার শিক্ষার্থী যোগ দেয়। এত বড় বিক্ষোভ সাম্প্রতিককালে হয়নি। থাইল্যান্ডে সেনাবাহিনী খুবই শক্তিশালী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আগে সেনাপ্রধান ছিলেন। গণতন্ত্রপন্থি শিক্ষার্থীরা সেনা-প্রভাবিত সরকারের বিরুদ্ধে। তারা রাজপরিবারের ক্ষমতাও ছাঁটাই করতে চায়।