ধ্বংসস্তূপে জন্মানো সেই সিরিয় শিশুকে অপহরণের শঙ্কা

Looks like you've blocked notifications!
সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নবজাতককে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। ছবি : রয়টার্স

ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত সিরিয়ার উত্তরাঞ্চল। সেখানকার জিনদায়রিস শহরের ধসে পড়া একটি বাড়ি থেকে এক নবজাতকে উদ্ধার করা হয়। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার যখন তাকে উদ্ধার করে তখনও মায়ের সঙ্গে নাড়ির বন্ধন ছিল নবজাতকের। অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া নবজাতক বর্তমানে সুস্থ রয়েছে। তার নামও রাখা হয়েছে। তাকে দত্তক নিতে আবেদন করছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার মানুষ।

তবে, নবজাতককে নিয়ে নতুন বিড়ম্বনায় পড়েছে সিরিয়ার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ধারণা করা হচ্ছে, অপহৃত হতে পারে সে। এই ভয়ে নিরাপদ স্থানে নেওয়া হয়েছে ওই নবজাতকে। সূত্রের বরাতে এক  প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।

ওই সূত্রটি বিবিসিকে বলেছে, ‘সম্ভাব্য অপহরণ ও ভুয়া দত্তক নেওয়ার ভয়ে ‘আয়া’কে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গেছে দ্য আফ্রিনের (সিরিয় শহর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।’

গতকাল অর্থাৎ সোমবার পর্যন্ত সিরিয়ার একটি হাসপাতালে ছিল আয়া। তবে, হাসপাতালের এলাকাটি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। সোমবার হাসপাতালটিতে একটি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। একজন পুরুষ নার্স ও দুই সশস্ত্র ব্যক্তি হাসপাতালটির ম্যানেজারকে বেধড়ক পিটিয়েছে। এরপরেই আয়াকে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।

তবে, আয়া অপহরণ হতে পারে এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রধান ডা. আহম্মদ হাজ হাসান। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘অপহরণের বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝির জন্য হয়েছে। সোমবার হাসপাতালে যা হয়েছে তা ছিল অভ্যন্তরীণ। এর সঙ্গে আয়ার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’

বিবিসি বলছে, আয়ার বিষয়টি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর হাজার হাজার মানুষ তাকে দত্তক নিতে চাইছে। তবে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আয়ার চিকিৎসাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এমনকি দত্তক দেওয়ার প্রক্রিয়ায় তারা সতর্কতা অবলম্বন করছে।

গত ৬ জানুয়ারি তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে সাত দশমিক আট মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এতে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় সিরিয়ার জিনদায়রিস শহর। আর এই শহরে বাস করতো আয়ার পরিবার। ভূমিকম্পে ধসে পড়া বাড়ির নিচে আটকে যায় আয়ার মা। ধ্বংসস্তূপের নিচেই জন্ম দেন নবজাতটিকে। উদ্ধারের সময় মায়ের নাড়ির সঙ্গে পেঁচিয়ে ছিল আয়া। ভূমিকম্পে আয়ার মা, বাবা, চার ভাই-বোন ও স্বজনেরা মারা যায়।

আয়াকে উদ্ধারের পর তাকে একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন ছিল সে। এমনকি হাসপাতালের ম্যানেজারের স্ত্রী আয়াকে বুকের দুধ খাওয়ায়। দত্তক নেওয়ার আগ পর্যন্ত আয়া তাদের কাছেই থাকবে বলে জানান ওই ম্যানেজার।