নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তলানিতে : জরিপ

Looks like you've blocked notifications!

একের পর এক মন্দ খবর আসছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য। করোনা মহামারি ট্রাম্প যেভাবে সামাল দিচ্ছেন তা নিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের করা একটি জরিপে দেখা যাচ্ছে, মার্চের শুরুতেও তাঁর পদক্ষেপের পক্ষে যতজন আমেরিকান ছিলেন এখন সেটাও নেই। কমে হয়েছে সর্বনিম্ন।

দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করা এবং ট্রাম্পের কম সংখ্যায় করোনা পরীক্ষা করার বিষয়টি নিয়ে অসন্তুষ্ট আমেরিকানরা। এসব কারণে তার পক্ষে সমর্থন কমেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কেননা এসব বিষয় দেশের মানুষের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমিয়েছে। বিশেষ করে করোনা মোকাবিলায়।

করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্পের পদক্ষেপ নিয়ে রয়টার্স প্যারিসভিত্তিক মার্কেট রিসার্চ কোম্পানি ইপসসের সঙ্গে এই জনমত জরিপটি করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের করোনা মোকাবিলা পদক্ষেপের অনুমোদন দিয়েছেন ৩৭ শতাংশ আমেরিকান। তবে ৫৮ শতাংশের সমর্থন পাননি ট্রাম্প।

২২-২৩ জুন জরিপটি চালানো হয়। মহামারি শুরুর পর গত মার্চের প্রথম দিক থেকে এই জরিপ চালানো হচ্ছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্প এর করোনা মোকাবিলা পদক্ষেপ নিয়ে অসন্তুষ্ট আমেরিকানের সংখ্যা ক্রমশই কমছে। কেননা সবশেষ জরিপে তার ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যহারের হার বেড়েছে।

এছাড়া পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র পাঁচ মাস (৩ নভেম্বর) আগে প্রতিটি জাতীয় জনমত জরিপে ট্রাম্পকে টপকে এগিয়ে গেছেন তার ডেমোক্রেটিক প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেন। গত সপ্তাহেও নিবন্ধিত ভোটারদের এক জরিপে ট্রাম্পের পয়েন্ট ছিল ১৩ কিন্তু সবশেষ জরিপে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে।

ট্রাম্প করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের তীব্রতা প্রকাশ্যে স্বীকার করতে সব সময় ধীরগতিতে চলেছেন, যেই ভাইরাস এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজারের বেশি আমেরিকানের প্রাণ কেড়েছে। তিনি অঙ্গরাজ্যগুলোকে পুনরায় সবকিছু সচল করার জন্য চাপ দিয়েই যাচ্ছেন যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তেমন পরিস্থিতি দেশে তৈরি হয়নি।

কোভিড-১৯-এর বিপদ জেনেও গত শনিবার ওকলাহোমার টুলসাতে ট্রাম্পের নির্বাচনী র‍্যালির আয়োজন করা হয়। খুবই কম সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে আশাহত হওয়ার ওই সমাবেশে তিনি বলেছেন, করোনার পরীক্ষার সংখ্যা কমানো উচিত, তাহলে আক্রান্তের সংখ্যাও কমবে।

করোনাকে ‘চায়না ভাইরাস’ বলেও উল্লেখ করে তিনি স্বাস্থ্য খাতের সঙ্গে যুক্তর কর্মীদের করোনা পরীক্ষার সংখ্যা কমানোর এই নির্দেশ দেন। প্রেসিডেন্টেন এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। কেননা দেশটিতে করোনার সংক্রমণের হার এখনো ঊর্ধ্বমূখী। তিনি এরমধ্যে পরীক্ষার সংখ্যা কমানোর কথা বলছেন।

গত মার্চ থেকেই জনসমর্থন হারাতে শুরু করেন ট্রাম্প। বিশেষ করে করোনা মহামারি মোকাবিলায় তার প্রশাসনের ব্যর্থতা থেকে এর শুরু হলেও সবশেষ গত ২৫ মে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ডের পর শুরু হওয়ার বিক্ষোভে ট্রাম্পের বিক্ষোভ বিরোধী কট্টর অবস্থানকেও এর বড় কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

শুধু অবশ্য জনসমর্থন নয় নিজ দলেরও সমর্থন হারিয়েছেন ট্রাম্প। বর্তমান প্রেসিডেন্টের হাতেই দেশ ‌‘সঠিক পথে’ আছে এমন অবস্থানে পক্ষে রিপাবলিকান পার্টির ৪৩ শতাংশ সমর্থন মিলেছে ট্রাম্পের। তিনি ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর রয়টার্স/ইপসোসের জরিপে যা সর্বনিম্ন।

ট্রাম্প যে পিছিয়ে পড়ছেন, তার আরেক প্রমাণ মিলেছে শনিবার তুলসার র‍্যালির পরের দিনই। ট্রাম্প ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারণা দল তাদের সর্বশেষ সংগৃহীত তহবিলের যে মাসিক হিসাব দিয়েছে, তাতেও বাইডেনের পেছনে ট্রাম্প। সব মিলেয়েই নির্বাচনী দৌড়ে পেছনে পড়েছেন ট্রাম্প।