পাকিস্তানে বন্যায় মৃতের সংখ্যা ১২০০ ছাড়িয়েছে

Looks like you've blocked notifications!
পাকিস্তানে বন্যার ভয়াবহতার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তানে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দেশটির উত্তরাঞ্চলে ইন্দুস নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এতে লাখ লাখ মানুষ হয়েছে নিঃস্ব। এরই মধ্যে দেশজুড়ে বন্যায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ২০০ ছাড়িয়েছে।

পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের হিসাবে শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে বন্যায় ৪১৬ জন শিশুসহ মোট এক হাজার ২০৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ১৯ জন। 

পাকিস্তানের গণমাধ্যম দ্য ডন এই তথ্য জানিয়েছে।

রেকর্ড মৌসুমি বৃষ্টিপাত ও উত্তরাঞ্চলের পাহাড় থেকে হিমবাহ গলে জলধারা হিসেবে নেমে আসায় সৃষ্টি হয়েছে এই বন্যার। 

মূলত উত্তরাঞ্চলের বেশির ভাগ এলাকা বন্যাকবলিত হলেও এখন তার ভয়বহতা দক্ষিণাঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে। শুক্রবার সিন্ধু প্রদেশের দাদু জেলার মানছার লেক ও জহিতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।

সিন্ধু প্রদেশের সেচ বিভাগের একজন প্রকৌশলী জানান, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ হাজার কিউসেক পানি মানছার লেক থেকে ইন্দুস নদীতে চলে এসেছে। পাশাপাশি নারা উপত্যকার একটি বাঁধ পেড়িয়ে ৭০ থেকে ৮০ হাজার কিউসেক পানি লেকটিতে প্রবেশ করেছে। তবে, লেকের পানির উচ্চতা বাড়লেও প্রতিরোধ বাঁধগুলো এখনও মজবুত আছে। ইন্দুস নদীর কারণে দাদু জেলার অনেক এলাকা ব্যাপক বন্যায় প্লাবিত হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

অন্যদিকে, দাদু জেলার ডেপুটি কমিশনার সৈয়দ মোর্তাজা শাহ জানান, ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম ও উদ্ধার অভিযান চলমান রয়েছে। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী, রেঞ্জার্স ও জেলা প্রশাসন ত্রাণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে।’

এদিকে, সিন্ধু প্রদেশ সরকারের মুখপাত্র ও করাচির প্রশাসক মোর্তজা ওয়াহাব জানান, ‘আমরা সতর্কাবস্থায় রয়েছি কেননা আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উত্তরের বন্যা আক্রান্ত উঁচু এলাকা থেকে পানি নিচে নেমে আসবে আর বন্যার পানি এই প্রদেশে প্রবেশ করবে।’

মারাত্মক বন্যার এই ঝুঁকির মুখে প্রদেশটির শত শত পরিবার রাস্তা ও উচুঁ শুকনো জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে ছুটছে এখনও বন্যার ক্ষতির মুখে না পড়া বন্দর শহর করাচির উদ্দেশে।

‘বৃষ্টি আর বন্যায় আমরা বাড়ি-ঘর হারিয়েছি, এখন করাচি যাচ্ছি এক আত্মীয়ের বাড়িতে, কেউ আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেনি’, বৃহস্পতিবার দাদু জেলা ছেড়ে ট্রাকে গন্তব্যে পৌঁছার আশায় রাস্তায় থাকা পঞ্চাশোর্ধ আল্লা বক্স পরিস্থিতির বর্ণনা দেন এভাবেই।

এদিকে, পাকিস্তানের বন্যা পূর্বাভাস বিভাগ জানিয়েছে ৪ থেকে ৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ইন্দুস নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত ও মাঝারী থেকে উচ্চ মাত্রার বন্যা দেখা দিতে পারে।

অন্যদিকে, পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে দক্ষিণাঞ্চলে সরে আসায় সরকারি কর্মকর্তারা উত্তরাঞ্চলের বাড়ি-ঘর ছেড়ে আসা লোকজনকে তাদের ভিটেমাটিতে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিচ্ছে।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বন্যাউপদ্রুত এলাকায় সফর অব্যাহত রেখেছেন। শুক্রবার তিনি গিলগিট-বাল্টিস্তানের ঘিজের জেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণকাজ পরিদর্শন করেন।