পুতিনের ভ্যাকসিন নিতে চাইছেন না করোনা মোকাবিলার ফ্রন্টলাইন যোদ্ধারা

Looks like you've blocked notifications!
তৃতীয় পর্যায়ের মানবদেহে পরীক্ষা ছাড়াই অনুমোদন দেওয়া রুশ করোনা ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন দেশটির চিকিৎসক-শিক্ষকসহ অনেকেই। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ায় চিকিৎসক, শিক্ষকসহ যাঁদের করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে, তাঁদের তালিকা করা হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় পর্যায়ে মানবদেহে পরীক্ষা ছাড়াই অনুমোদন দেওয়া এই ভ্যাকসিন নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন অনেকেই।

রাশিয়ার শিক্ষকদের একটি সংগঠন ‘উচিটেল’ নিরাপত্তাগত কারণ দেখিয়ে সরকার অনুমোদিত ভ্যাকসিন প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানিয়ে অনলাইন পিটিশন চালু করেছে। তাঁদের দাবি, বর্তমানে ভ্যাকসিন গ্রহণের বিষয়টি ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে; এটি যেন বাধ্যতামূলক না করা হয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।

‘উচিটেল’ সংগঠনটির কো-চেয়ারম্যান ম্যারিনা বালুয়েভা পিটিশনকে সতর্কতামূলক উদ্যোগ উল্লেখ করে বলেন, ‘করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক-ভি নিয়ে দুশ্চিন্তার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। প্রথমত, দেশি ভ্যাকসিন বিদেশিগুলোর চেয়ে ভালো। আরেকটি কারণ হচ্ছে, আমাদের ভ্যাকসিন ট্রেনের গতিতে বানানো হয়েছে। এরই মধ্যে সবাই ভ্যাকসিন নিয়ে তাড়াহুড়া নিয়ে কথা বলছে।’

রুশ বিরোধী নেতা অ্যালেক্সেই নাভালনির ঘনিষ্ঠ চিকিৎসক আনাস্তাসিয়া ভাসিলেয়ভা বলছেন, ক্রেমলিনের রাজনৈতিক চাপে এত দ্রুত করোনা ভ্যাকসিন আনা হয়েছে।

গত ১১ আগস্ট প্রথম দেশ হিসেবে করোনার ভ্যাকসিনের নিবন্ধন করায় রাশিয়া। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষার আগেই নিবন্ধন করানোয় বিশ্বের একাধিক বিজ্ঞানী ভ্যাকসিনটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পুতিন অবশ্য দাবি করেছেন, পর্যাপ্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট পুতিন জানান, মানুষের দেহে প্রায় দুই মাস পরীক্ষা চালানোর পর রাশিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভ্যাকসিনটির অনুমোদন দিয়েছে।

গ্যামেলিয়া ইনস্টিটিউটের প্রশংসা এবং ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সম্পর্কে আশ্বস্ত করে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি আবারও বলতে চাই, এটা (ভ্যাকসিন) প্রয়োজনীয় সব পরীক্ষা উতরে এসেছে। এটি ব্যবহার করা নিরাপদ—এ নিশ্চয়তা এবং এর কার্যকারিতা সম্পর্কেও নিশ্চয়তা দেওয়া যায়। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’

ভিডিও কনফারেন্সে পুতিন জানান, তাঁর মেয়ে এরই মধ্যে এই ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং তিনি ভালো আছেন। পুতিন আরো দাবি করেন, ‘আমার এক মেয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছে এবং এক অর্থে সে ভ্যাকসিন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। প্রথম দুবার ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তাঁর মেয়ের মৃদু জ্বর এসেছিল, তবে ‘পরে সব ঠিক হয়ে যায়। এখন সে ভালো আছে। তার অ্যান্টিবডি কাউন্টও এখন ভালো।’

পুতিনের দুই মেয়ে। একজনের নাম মারিয়া, অন্যজনের নাম কাতেরিনা। তাঁদের মধ্যে কে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তা জানা যায়নি।

এদিকে ১ সেপ্টেম্বর রাশিয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। যদিও সেদিনই দেশটিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়ায়। সমালোচকরা বলছেন, অনেকটা জোর করেই করোনা পরিস্থিতিকে স্বাভাবিক দেখাতে চাইছেন রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন।