পুতিন ঠিক কাজই করেছেন : নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট
চলমান ইউক্রেন ইস্যুতে রাশিয়ার অবস্থানকে সমর্থন দিয়েছেন নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল ওর্তেগা। রাশিয়ার অবস্থানকে সমর্থনকারী প্রথম বিশ্বনেতাদের একজন ওর্তেগা। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
গতকাল সোমবার ওর্তেগা বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঠিক কাজই করেছেন।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন গতকাল পূর্ব ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী-নিয়ন্ত্রিত ডনবাসের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
পূর্ব ইউক্রেনের অঞ্চল দুটি হলো—দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ক। এই দুই ‘প্রজাতন্ত্রের’ সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন।
দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে ‘প্রজাতন্ত্রের’ স্বীকৃতি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর অঞ্চল দুটিতে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তিনি রুশ সেনাদের দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কে শান্তিরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে রয়টার্স জানায়, পুতিনের এ-সংক্রান্ত ডিক্রি জারির পর দোনেৎস্ক এবং লুহানস্কে ট্যাংক ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম ঢুকতে দেখা গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব পুতিনের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানাচ্ছে। এই ঘটনার জেরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা দিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়নও একই পথে হাঁটছে। এমন প্রেক্ষাপটে পুতিনের প্রতি সমর্থন জানালেন নিকারাগুয়ার প্রেসিডেন্ট ওর্তেগা।
সাবেক মার্ক্সবাদী গেরিলা বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, যদি ক্রিমিয়ার মতো গণভোটের আয়োজন করা হয়, তাহলে মানুষ ওই অঞ্চলগুলোকে (দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক) রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ভোট দেবে।’
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হয়ে গেছে। পুতিন ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।
স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আপনি উপসংহার টেনে বলতে পারেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ শুরু হয়ে গেছে। রাশিয়ানরা, প্রেসিডেন্ট পুতিন ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব এবং এর আঞ্চলিক অখন্ডতার ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছেন।’
‘আমরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে পূর্ব ইউক্রেনের দুটি অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিতে দেখেছি। রাশিয়া সেখানে ট্যাংক, সেনা মোতায়েন করেছে তাও আমরা এখন বলতে পারি। এ থেকেই বলা যায় আগ্রাসন শুরু হয়ে গেছে,’ বলেন জাভিদ।
অন্যদিকে, পূর্ব ইউক্রেনের দুই অঞ্চলে পুতিনের সেনা পাঠানোর জেরে যুক্তরাজ্য শিগগিরই রাশিয়ার ওপর ‘কঠোর’ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। খবর রয়টার্সের।
সাংবাদিকদের জনসন মঙ্গলবার বলেন, ‘আমরা অবিলম্বে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব। রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞা কেবল প্রথম ধাপ। কারণ, আমাদের ধারণা সামনে রাশিয়ার আরও অযৌক্তিক কর্মকাণ্ড দেখতে পাওয়া যাবে।’