প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হেডস্কার্ফ পরার নিষেধাজ্ঞা বাতিল করলেন অস্ট্রিয়ার আদালত

Looks like you've blocked notifications!
ইউরোপের দেশ অস্ট্রিয়ায় মুসলিম নারীদের হিজাব পরা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক রয়েছে। ছবি : সংগৃহীত

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট ধর্মভিত্তিক মাথাঢাকা কাপড় (হেডস্কার্ফ বা হিজাব) পরতে নিষেধ করা আইন বাতিল করেছেন অস্ট্রিয়ার সাংবিধানিক আদালত। সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে এ কথা জানানো হয়েছে।

মুসলমান মেয়েদের মাথায় পরা কাপড়কে (হিজাব) লক্ষ্যবস্তু বানাতে আইনটি করা হয়েছিল এবং এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করছিল বলে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে। আদালত বলেছে, ‘আইনটি মুসলিম মেয়েদের কোণঠাসা করে ফেলতে পারে।’

আদালত প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টোফ গ্র্যাবেনওয়ার্টার বলেছেন, ‘নির্দিষ্ট করে শুধু মুসলিম মেয়েদের বেলায় খাটে, এমন নিষিদ্ধের ফলে এটি তাদের বৈষম্যমূলকভাবে অন্য শিক্ষার্থীদের থেকে আলাদা করে ফেলছে।’

আদালত এমন সময় এই আইন বাতিল করল যখন সরকার চাইছিল, শিশুদের হেডস্কার্ফ পরা নিষিদ্ধের বয়সসীমা ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ১৪ বছর করতে। দেশটির রক্ষণশীল পিপলস পার্টি ও কট্টর ডানপন্থি ফ্রিডম পার্টির জোট ক্ষমতায় থাকাকালে গত বছর মে মাসে এই আইন পাস হয়।

আইনটির পক্ষে সরকারের যুক্তি ছিল বলছে, এই আইন মেয়েদের তাদের সহপাঠীদের দেওয়া সামাজিক চাপ থেকে মুক্ত করতে পারে। কিন্তু আদালত এই বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে ভুল মানুষকে শাস্তির মুখোমুখি করা হচ্ছে। রাষ্ট্র বরং প্রয়োজন হলে লিঙ্গ ও ধর্মভিত্তিক ‘বুলিয়িং’ (তাচ্ছিল্য করা বা হেয় প্রতিপন্ন করা) বন্ধে আইন করতে পারে।’   

‘অস্ট্রিয়ায় চলমান সমাজ ব্যবস্থার পাশাপাশি ভিন্ন কোনো সমাজ গড়ে ওঠা ঠেকাতেই আইনটি করা হয়েছিল’ বলে জানিয়েছেন দেশটির চ্যান্সেলর সেবাস্তিয়ান কুর্জ। অন্যদিকে ভাইস চ্যান্সেলর হেইঞ্জ ক্রিস্টিয়ান স্ট্র্যাশ বিবিসিকে বলেছেন, ‘সরকার মেয়েশিশুদের রাজনৈতিক ইসলামের হাত থেকে রক্ষা করতে চায়।’

১০ বছরের কম বয়সে অর্থাৎ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মুসলমান মেয়েরা যাতে হিজাব বা অন্য কোনো মাথার কাপড় ব্যবহার না করে সেই লক্ষ্যে গত বছর একটি আইন পাস করে অস্ট্রিয়া। তবে ইহুদিদের টুপি এবং শিখদের পাগড়ি পরাকে এই আইনের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল।

অস্ট্রিয়ার মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থা ইসলামিক ফেইথ কমিউনিটি আদালতের এই রায়কে সাধুবাদ জানিয়েছে। তারাই সাংবিধানিক আদালতে আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেছিল।