বিরোধীদের দমনে থার্মোবারিক বোমার ব্যবহার করছে জান্তা সরকার

Looks like you've blocked notifications!
মিয়ানমারে দুই বছর আগে সেনা অভ্যুত্থানে জান্তা ক্ষমতা দখল করে। রয়টার্সের ফাইল ছবি

মিয়ানমারে বিরোধীদের দমনে মহাশক্তিশালী থার্মোবারিক বোমার ব্যবহার করছে দেশটির সেনাবহিনী। গত মাসে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের একটি গ্রামে আকাশ পথে এই বোমা দিয়ে হামলা চালিয়েছিল সেনাবহিনী, যাতে নারী, শিশুসহ ১৬০ জন মানুষ মারা যায়। আজ মঙ্গলবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এ দাবি করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। খবর আল-জাজিরার।

প্রতিবেদনে মানবাধিকার নজরদারি সংস্থাটি বলছে, গত ১১ এপ্রিল সাগাইং অঞ্চলের পাজিগি গ্রামের বাইরে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জান্তা বিরোধীরা। সেখানে একটি স্থানীয় কার্যালয় খুলছিল তারা। এই অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সেখানে উপস্থিত হয়েছিল অন্তত ৩০০ জন। ঠিক সেই সময়েই বিমান হামলা চালায় জান্তা বাহিনী। ব্যবহার করা হয় থার্মোবারিক 

বোমার, যেটি ভ্যাকুম বোমা নামেও পরিচিত। এই বোমার ব্যবহার করে মিয়ানমার সরকার আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জিানিয়েছে নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থাটি। তারা বলছে, ‘এটি একটি যুদ্ধাপরাধ।’

এইচআরডব্লিউর এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক এলিয়ান পেয়ারসন বলেন, ‘বেসামরিক জনবহুল এলাকায় সর্বাধিক মৃত্যুর জন্য পরিকল্পিত অস্ত্রের ব্যবহার, মানব জীবনের প্রতি স্পষ্টভাবে অবহেলা। নৃশংসতা রোধ বিদেশি সরকারগুলোকে জান্তা সরকারের জন্য বরাদ্দকৃত তহবিল, অস্ত্র ও জ্বালানি সহায়তা বন্ধ করা উচিত।’

থার্মোবারিক বোমা অন্যন্য বিস্ফোরক থেকে ভয়ংকর। আশপাশে থাকা অক্সিজেনের সাহায্য নিয়ে এটি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরণ ঘটায়।

বোমাটি ফুয়েল দিয়ে তৈরি করা হয়। হাত থেকে শুরু করে বিমান থেকেও এটি ফেলা যায়। ফুয়েল থাকার কারণে এটি অনেক বড় বিস্ফোরণ ঘটায় এবং স্থায়ীত্বও থাকে বেশি।

এইচআরডব্লিউ বলছে, আমরা ওই গ্রামে ঘটে যাওয়া নৃশংস হামলার ৫৯ ছবি পর্যবেক্ষণ করেছি। এমনকি, একটি ভিডিও পর্যালোচনা করেছি। পরে, আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, হামলাটি থার্মোবারিক বোমা দিয়েই করা হয়েছে।

২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটিতে আন্দোলন করছে গণতন্ত্রপন্থীরা। বিশৃঙ্খলায় রয়েছে দেশটি। নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসছে পশ্চিমারা।

মিয়ানমার নিয়ে গত মার্চে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল জাতিসংঘ। ওই প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলেছিল, মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে বিরোধীদের দমনে বিমান ও আর্টিলারি শেল দিয়ে হামলা করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। মানুষদের বাস্তচ্যুত করতে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়েছে তারা। এমনকি, মানবাধিকার কর্মীদের ওইসব এলাকায় প্রবেশ করতে দেয়নি সেনাবাহিনী।