মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গোলায় রাখাইনে দুই নারী নিহত
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া গোলার আঘাতে রাখাইন রাজ্যে একটি রোহিঙ্গা গ্রামে দুই নারী নিহত হয়েছেন। এদের একজন অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এ সময় আরো সাতজন আহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা গ্রামের গোলা নিক্ষেপের ঘটনা এমন একটা সময়ে ঘটল যখন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যার স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা নিশ্চত করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্তর রাখাইনের বুথিডং শহরতলী থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদে সদস্য মং কিউ জান রয়টার্সকে বলেন, কাছের ব্যাটালিয়ন থেকে ছোড়া ওই গোলা কিন তায়ুং গ্রামে গতকাল মাঝরাতে এসে আঘাত করেছে। সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থানীয় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এখানে লড়াই করছে।
‘অথচ গতকাল এখানে কোনো লড়াই ছিল না, কিন্তু তার পরও নিরাপত্তা বাহিনী বিনা উসকানিতে এখানে গোলা নিক্ষেপ করে’, টেলিফোনে রয়টার্সকে এসব কথা বলেন সংসদ সদস্য। তিনি আরো জানান, গত এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো গোলায় মানুষ হত্যার মতো ঘটনা ঘটল।
যদিও সেনাবাহিনী এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বরং দাবি করেছে, বিদ্রোহিরা আজ ভোর রাতে একটা সেতুতে হামলা চালিয়েছে।
২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর ধর্ষণ, হত্যা, নির্যাতনের মুখে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের মাতৃভূমি থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের উপকূলে শারণার্থী শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করে। বাস্তুচ্যুত এই রোহিঙ্গারা সেখানে এক অমানবিক জীবনযাপন করছে। জাতিসংঘ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ একে পাঠ্যপুস্তকে বর্ণিত ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এখনো রাখাইনে বেশকিছু রোহিঙ্গা বসবাস করছে। কিন্তু তাদের ওপর ব্যাপকভাবে বিধিনিষেধ আরোপের অভিযোগ রয়েছে। এই বিধিনিষেধের কারণে রোহিঙ্গারা স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। তারা স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষার অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে।