যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকিং খাতে বড় ধাক্কা, একটি ব্যাংক বন্ধ ঘোষণা

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : রয়টার্স

২০০৮ সালে সর্বশেষ আর্থিক সংকটে পড়েছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্ব। ওই সময় দেউলিয়া হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ১৫ বছরের মাথায় সেই সংকট ফের দেখা দিয়েছে। এবার বন্ধ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এসভিবি ফিনান্সিয়াল গ্রুপের সিলিকন ভ্যালি (এসভিবি) ব্যাংক। শুক্রবারের (১০ মার্চ) এই সংকট বিশ্ব বাজারেও জোরেশোরে ধাক্কা দেয়। ফলে, আটকে পড়েছে বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি মার্কিন ডলার। খবর রয়টার্সের।

লন্ডনভিত্তিক সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রকরা সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকটি বন্ধ করে দিয়েছে। একইসঙ্গে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়ে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশনকে (এফডিআইসি) নির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রকরা।

ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান্টা ক্লারা ভিত্তিক এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি গত বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক খাতের র‌্যাংকিংয়ে ১৬তম স্থানে ছিল। ওই সময় পর্যন্ত তাদের সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ২০ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

রয়টার্স বলছে, প্রযুক্তি কেন্দ্রিক সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের আকস্মিক পতন নির্দিষ্ট কারণেই হয়েছে। গত বছর থেকে ক্রমাগতভাবে সুদের হার বাড়িয়ে যাচ্ছিল যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর ফলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির সংকট বাড়ছিল। সুদের হার বাড়ায় আমানত হারাচ্ছিল ব্যাংকটি। ট্রেজারি থেকে তারা হারিয়েছিল ১৮০ কোটি ডলার। মূলধন বাড়ানোর প্রচেষ্টা চালিয়েও তারা ব্যর্থ হয়।

২০০৮ সালে সংকটের পরেই ব্যাংকিং খাতে নতুন করে নিয়মনীতি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান খোলার জন্য মূলধনের পরিমাণ বাড়ানো হয়। এতে করে যে কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ বা দেউলিয়া হলেও এর প্রভাব গোটা অর্থনীতিতে পড়বে না। ওইসব নীতির পরে প্রথমবারের মতো কোনো ব্যাংক বন্ধ হলো।

এফডিআইসি জানিয়েছে, আগামী ১৩ মার্চ সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ সমস্ত শাখা খোলা হবে। সোমবার সকাল থেকে যেসব আমানতকারী বিমার আওতাধীন রয়েছেন তারা তাদের অর্থ পাবেন।

এফডিআইসির তথ্যানুযায়ী, ২০২২ এর শেষ নাগাদ পর্যন্ত সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকটির ৮৯ শতাংশ গ্রাহক বিমার আওতাধীন ছিল না। ওই ৮৯ শতাংশ গ্রাহকের ব্যাংকটিতে জমা ছিল ১৭ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। বিমা ছাড়া এসব গ্রাহকের অর্থের কি হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।

বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে রয়টার্সকে বলেন, ‘বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলিকন ভ্যালির সঙ্গে অন্য কোনো ব্যাংককে একীভূত করতে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এফডিআইসি। তবে, এখনও কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান এতে সায় দেয়নি।’

রয়টার্সের তথ্য মতে, গত দুদিনে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকটি শেয়ার মার্কেটে হারিয়েছে ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ। আর ইউরোপিয়ান ব্যাংকগুলো হারিয়েছে পাঁচ হাজার কোটি ডলার।