যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তি সই

Looks like you've blocked notifications!
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল গতকাল বুধবার ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে যৌথ সংবাদ সম্মেলন শেষে হাত মেলাচ্ছেন। ছবি : রয়টার্স

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি মোকাবিলায় একটি যুগান্তকারী চুক্তি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া। দক্ষিণ কোরিয়ায় পর্যায়ক্রমে মার্কিন পরমাণু অস্ত্রধারী সাবমেরিন মোতায়েনে এবং সিউলকে নিজেদের পারমাণবিক পরিকল্পনা কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে সম্মত হয়েছে ওয়াশিংটন। বিনিময়ে নিজেরা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার ব্যাপারে রাজি হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। খবর বিবিসির।

নতুন এই চুক্তির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘ওয়াশিংটন ঘোষণা উত্তর কোরিয়ার আক্রমণ প্রতিরোধে মিত্রদের সহযোগিতা জোরদার করবে।’

সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। পিয়ংইয়ং কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে, যা দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে লক্ষ্যবস্তু করা যাবে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে আঘাত করতে সক্ষম দূরপাল্লার অস্ত্রগুলোকেও পরিমার্জন করছে দেশটি।

আগেই একটি চুক্তিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষার বাধ্যবাধকতা এবং প্রয়োজনে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি ছিল যুক্তরাষ্ট্রের। কিন্তু সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার কেউ কেউ সেই প্রতিশ্রুতি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং দেশটিকে নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। নতুন এই ওয়াশিংটন চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার, আক্রমণ প্রতিহত করা এবং মিত্রদের রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের এটি অভূতপূর্ব প্রতিশ্রুতি।’

প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, নতুন চুক্তিটি বেশ কয়েক মাস ধরে চলা আলোচনার ফলাফল। নতুন চুক্তির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ৪০ বছরের মধ্যে প্রথমবার দক্ষিণ কোরিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র সমৃদ্ধ সাবমেরিন এবং পারমাণবিক অস্ত্রবাহী বোমারু বিমানসহ অন্যান্য কৌশলগত সরঞ্জাম পাঠাবে। এছাড়া পারমাণবিক পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনার জন্য উভয় দেশ একটি পরামর্শক কমিটিও তৈরি করবে।

বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তির পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র বা তার মিত্র ও অংশীদারদের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হামলা মেনে নেওয়া হবে না এবং এমন পদক্ষেপ নেওয়া যেকোনো সরকারের পতন ঘটানো হবে।’

বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছে, দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে না এবং পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তার ঠেকাতে বিশ্বস্ত রাষ্ট্র হিসেবে কাজ করবে। দক্ষিণ কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি থেকে বিরত রাখাকে যুক্তরাষ্ট্র অপরিহার্য বলে মনে করেছে। কারণ অন্যান্য দেশগুলো তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে।