যে কারণে ৯০ হাজার পাকিস্তানি হজে যেতে পারছেন না

Looks like you've blocked notifications!
ছবি : রয়টার্স

অর্থনৈতিক টালমাটালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ পাকিস্তান। দেশটির রিজার্ভ তলানিতে পৌঁছেছে। শ্রীলঙ্কার মতো দেশটিও দেউলিয়া হয়ে যাবে, এমন ধারণা সংশ্লিষ্টদের। এবার রিজার্ভ রক্ষা করতে হজে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। ফলে, অর্ধেক পাকিস্তানি নিজের দেশ থেকে হজে যেতে পারবে না। গতকাল রোববার (৫ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

পাকিস্তানি গণমাধ্যমটি জানায়, রিজার্ভ রক্ষার্থে এবার হজে কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানি সরকার। এতে করে দেশটির ৯০ হাজার বাসিন্দা এবার হজে যেতে পারবে না।

কোন দেশ থেকে কত ব্যক্তি হজে যেতে পারবে বিষয়টি নির্ধারণ করে দেয় সৌদি আরব। সেই অনুযায়ী, এবার পাকিস্তানের প্রায় এক লাখ ৮০ হাজার নাগরিক হজে যেতে পারবে। তবে, রিজার্ভ রক্ষার্থে কোটার পাকিস্তান বসবাসরত অর্ধেক নাগরিক হজে যেতে পারবে। আর বাকি অর্ধেক যাবে বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা। এতে করে রিজার্ভের ৪০ কোটি মার্কিন ডলার বেচে যাবে।

সরকারি সূত্রগুলোর বরাতে গণমাধ্যমটি জানায়, বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা কোটা ব্যবহার করে হজে যেতে পারবে। অথবা কোটা ব্যবহার করে দেশে থাকা তাঁর স্বজন কিংবা অন্য কোনো ব্যক্তির খরচ বহন করতে পারবে। বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতির জন্যই পাক সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।

এর আগে পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইশাক দার ও ধর্মমন্ত্রী মুফতি আব্দুল শাকুরের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এবার বিষয়টি পাকিস্তানের ফেডারেল পার্লামেন্টে তোলা হবে। সেখানে পাস হলেই এটি কার্যকর হবে।

ওই বৈঠকে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, এ বছর হজের জন্য প্রতি পাকিস্তানির খরচ হতে পারে ১২ থেকে ১৩ লাখ রুপি (পাকিস্তানি মুদ্রা)। যা আগের বছর থেকে সাত শতাংশ বেশি অর্থাৎ হজে যাওয়াদের অতিরিক্ত খরচ হবে পাঁচ লাখ রুপি।

বৈঠকের পর ধর্ম মন্ত্রণালয়ের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক উমর বাট বলেন, ‘বৈদেশিক মুদ্রার জন্যই এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই কোটার ফলে বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা আমাদের নামে হজে যেতে পারবে।’

পাকিস্তানের অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হজ-২০২৩-এর নীতি নির্ধারণের জন্যই বৈঠকটি করা হয়। এ ছাড়া কতজন আবেদন করতে পারবে তা নির্ধারণ করতে করা হয়।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার আমাদের দেশ থেকে এক লাখ ৭৯ হাজার ২১০ নাগরিক হজে যেতে পারবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। তবে, অর্থনৈতিক কারণে সরকার এত মানুষের হজে খরচ করতে আগ্রহী নয়।’ 

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক বিষয়টি মাথায় রেখে বৈঠকে সিদ্ধান্তটি নেওয়া হয়। ফলে, পাকিস্তানে বসবাসরত ৮৯ হাজার ৬০৫ নাগরিক হজে যেতে পারবে। আর বাকি অর্ধেক যাবে বিদেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিরা।’

এই সিদ্ধান্তের ফলে পাক সরকারের কত বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট করা যায়নি। তবে, ধারণা করা হচ্ছে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হলে দেশটির ৪০ কোটি মার্কিন ডলার রক্ষা পাবে। এরপরও হজের জন্য রিজার্ভ থেকে পাকিস্তানের খরচ হবে ২৮ কোটি চার লাখ ডলার।