রানির শাসনকালের ৭০ বছর : সেজেছে যুক্তরাজ্য, রাজকীয় অনুষ্ঠান শুরু আজ

Looks like you've blocked notifications!
ইংল্যান্ডে এখন সাজ সাজ রব। ছবি : রয়টার্স

গ্রাম কিংবা ছোট শহর থেকে শুরু করে রাজধানী—ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের শাসনকালের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘জুবিলি উইকএন্ড’ উদ্‌যাপনে শামিল হতে সেজে উঠেছে গোটা যুক্তরাজ্য। আজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজকীয় উদ্‌যাপন, যা শেষ হবে সপ্তাহান্তে আগামী রোববার। খবর বিবিসর।

উৎসবের আমেজ যুক্তরাজ্যজুড়ে। আগামী চার দিন দেশটিতে একের পর এক নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। রাজপরিবার ছাড়াও ‘জুবিলি পার্টি’ সফল করতে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ও। এরই মধ্যে উদ্‌যাপন শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক স্টোনহেঞ্জে। ১৯৫৩ সালে রানির অভিষেকের সময়ের ছবি প্রজেক্টরের সাহায্যে তুলে ধরা হয়েছে পাথরের গায়ে।

১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পরে সিংহাসনে বসেন তাঁর কন্যা রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। সে হিসাবে গত ফেব্রুয়ারিতে রানির শাসনকালের ৭০ বছর পূর্ণ হয়েছে। কিন্তু, বাবার মৃত্যুর মাসে বর্ষপূর্তি পালন করতে চান না রানি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উদ্‌যাপনের জন্য জুন মাসকেই বেছে নিয়েছেন তিনি।

আজ ২ জুন স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় শুরু হবে ‘ট্রুপিং দ্য কালার’ প্যারেড। সে প্যারেডে অংশ নেবেন সেনা, সংগীতশিল্পী ও বাদ্যযন্ত্রী। থাকবে ঘোড়াও। বাকিংহাম প্রাসাদ থেকে শুরু হওয়া সে প্যারেডে ঘোড়ার গাড়ি করে যোগ দেবেন রাজপরিবারের সদস্যেরা। প্যারেড শেষে থাকবে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের ফ্লাই-পাস্ট, যা বাকিংহামের বারান্দা থেকেই উপভোগ করবে রাজপরিবার। এবার অবশ্য রাজপরিবারের কয়েক জন সদস্যকে বারান্দায় দেখা যাবে না। যৌন হেনস্তা বিতর্কে নাম জড়ানো রানির মেজ ছেলে অ্যান্ড্রু এবং যুক্তরাজ্য ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়া রানির নাতি হ্যারি ও তাঁর স্ত্রী মেগান প্যারেড দেখবেন, তবে বারান্দায় দৃশ্যমান হবেন না।

প্রথা মেনে প্লাটিনাম জুবিলিতেও যুক্তরাজ্য ছাড়াও চ্যানেল দ্বীপ, আইল অব ম্যান এবং যুক্তরাজ্যের অধীন অঞ্চলগুলো মিলিয়ে প্রায় দেড় হাজার আলোক-সংকেত জ্বলবে বিশ্বজুড়ে। মূল আলোক-সংকেতটি জ্বালানো হবে বাকিংহামে।

এরপর আগামীকাল সেন্ট পল্‌স ক্যাথিড্রালে থাকছে ‘থ্যাঙ্কসগিভিং সার্ভিস’। পরদিন (৪ জুন) ‘এপসম ডাউনস’-এ সপরিবারে ডার্বি দেখতে যাবেন রানি। ওই দিনই বাকিংহাম প্রাসাদে এক বিশেষ পার্টিরও আয়োজন থাকছে। যেখানে যোগ দেবেন গায়ক এড শেরনের মতো সংগীত জগতের অনেক তারকা। অন্তত ২২ হাজার অতিথির যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে ওই অনুষ্ঠানে।

এরপর ৫ জুন থাকছে ‘বিগ জুবিলি লাঞ্চ’। বিভিন্ন এলাকায় বড় টেবিল পাতা হবে সেদিন। পিকনিকের আমেজে প্রতিবেশীদের সঙ্গে খাবার ও পানীয় ভাগাভাগি করে নেবেন এলাকাবাসী। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবী হতে নাম লিখিয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ইংল্যান্ডবাসী। প্রায় এক কোটি মানুষ ওই জুবিলি লাঞ্চে অংশগ্রহণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছেন। শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, জুবিলি লাঞ্চের আয়োজন হবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোসহ নানা দেশে। এসব দেশের তালিকায় রয়েছে নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ব্রাজিল, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সুইজারল্যান্ডেও।

এরপর আগামী রোববারই আয়োজন করা হবে সবচেয়ে বড় আয়োজন—‘জুবিলি পেজেন্ট’। ওই আয়োজনের সামনে থাকবে রানির ‘গোল্ড স্টেট ক্যারেজ’ বা রাজকীয় রথ। তবে, বয়সের কারণে রানি রথে থাকবেন না। এর পরিবর্তে রানির রাজ্যাভিষেকের পর গত ৭০ বছরে তাঁর জীবনের নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রজেক্টরের সাহায্যে ফুটিয়ে তোলা হবে ওই ঘোড়ার গাড়ির জানালায়।

ওই পেজেন্টের অংশ ‘রিভার অব হোপ’-এ যোগ দিতে যুক্তরাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে আসবে শিক্ষার্থীরা। আগামী ৭০ বছরে বিশ্বের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা কী কী আশা করছে, তা ২০০টি সিল্কের পতাকায় তুলে ধরবে তারা। শিক্ষার্থীদের সে মিছিল চলন্ত নদীর মতো দেখাবে বলে এ আয়োজনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘রিভার অব হোপ’ বা ‘আশার নদী’। এ ছাড়া প্লাটিনাম জুবিলির সাজে সেজে উঠেছে বিখ্যাত টাওয়ার অব লন্ডনও।