রোহিঙ্গা গণহত্যা : আইসিজেতে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে গণশুনানি
রোহিঙ্গা গণহত্যার মামলায় জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের সামরিক জান্তার তোলা আপত্তির ওপর গণশুনানি শুরু হচ্ছে ২১ ফেব্রুয়ারি।
বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিজে জানিয়েছে, নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগের পিস প্যালেসে ২১, ২৩, ২৫ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি এই শুনানির তারিখ রাখা হয়েছে। খবর ইউএনবির।
মহামারি পরিস্থিতির কারণে মিশ্র পদ্ধতিতে এই শুনানি হবে। আদালতের কিছু সদস্য গ্রেট হল অব জাস্টিসে উপস্থিত থাকবেন। বাকিরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
মামলার দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা সরাসরি অথবা ভিডিও লিংক ব্যবহার করে শুনানিতে অংশ নিতে পারবেন এবং এ বিষয়ে নির্দেশনা আদালতের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে।
এ ছাড়া কূটনৈতিক কোর, গণমাধ্যম কর্মী ও জনসাধারণ আদালতের ওয়েবসাইট ও ইউএন ওয়েব টিভির সরাসরি ওয়েব কাস্টের মাধ্যমে এই শুনানি দেখতে পারবেন।
রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে নির্বিচারে গণহত্যার অভিযোগ এনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা এ মামলার বিচারে আইসিজের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করেছে মিয়ানমারের জান্তা। এবারের গণশুনানি হবে মূলত মিয়ানমারের সেই আপত্তির ওপর।
এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে অভিযোগকারী গাম্বিয়া এবং অভিযুক্ত মিয়ানমারকে তাদের আইনি যুক্তি দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিলো আইসিজে।
গাম্বিয়াকে ওই বছরের ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের অভিযোগের বিষয়ে আইনি যুক্তিগুলো উপস্থাপন করতে বলা হয়েছিল। অন্যদিকে অভিযোগের মুখে থাকা মিয়ানমারকে তাদের নির্দোষিতার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে এ মামলার কার্যক্রমে ভাটা পড়ে।
পাঁচ বছর আগে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামে গ্রামে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অভিযানে যে বর্বরতা চালানো হয়, তার মধ্য দিয়ে দেশটি ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা কনভেনশন ভঙ্গ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এ মামলায়।
হেগের পিস প্যালেসে ২০১৯ সালের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর এ মামলার ওপর প্রাথমিক শুনানি হয়। তাতে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দেন দেশটির বিচার বিষয়ক মন্ত্রী আবুবকর তামবাদু। অন্যদিকে মিয়ানমারের পক্ষে শুনানি করেন নোবেলজয়ী নেত্রী অং সান সু চি, যিনি এখন মিয়ানমারের জান্তার হাতেই বন্দি।
গতবছর ফেব্রুয়ারিতে এক সামরিক অভ্যুত্থানে সু চির দল এনএলডির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে আবারও সামরিক শাসন ফিরিয়ে আনে দেশটির সেনা নেতৃত্ব।